কচুয়া- সহদেবপুর প্রতিনিধিঃ সারা দিন রোজা রেখে দিনেরক্লান্তি শেষে মাগরিবের একটু আগে যখন হরেক রকম ইফতারি সামনে আসে তখন আর তর সহেনা। সারা দিনে যে ক্লান্তি লাগে তার দ্বিগুন যেন ইফতারির একটু আগে তবুও তো হয় রোজা রাখা। পরিবার পরিজন মিলে প্রতিদিনই হরেক রকম ইফতারে মেতে ওঠে ধর্মভীর“ মুসলমানরা। মাগরিবের আযান দিতেই শুর“ হয় মুখের চাপাচাপি। মন চায় যেন সবগুলো ইফতারি এক গালে দিয়ে সাবার করে পেলা। কিন্তু তা কি সম্ভব? আগে সকলে মিলে চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয় ইফতার। ইফতারি খাওয়ার পর কয়েক গ্লাস ঠান্ডা পানি যখন পেটে চালান করা হয় সারা দিনের ক্লান্তি যেন দূর হয়। বেদম আরাম এসে হাজির হয় সারা শরীরের। কিন্তু কি খেয়ে আরাম হল ভাবি কি? ইফতারির নামে আমরা কি খাচ্ছি? স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছি তো? ইফতার কেনার সময় কি ভাবি যে কি কিনতেছি? আমাদের দেশে ইফতারির মধ্যে সচারাচর দোকানপাটে পাওয়া যায়, ইফতারির মুখরোচক পিয়াজু , বেগুনি, সবজি বড়া বিভিন্ন কাবাব, আলুর চপ ও জিলাপি সাথে মুড়ি। বাহিরে বিভিন্ন দোকানপাটে বিক্রি হওয়া ইফতার আইটেম আবেদনময় করতে কারিগররা ব্যবহার করছে মাত্রাতিরক্ত কার্বাইড, ফরমালিন, ক্যামিকাল রং ও মবিলসহ নানা রাসায়নিক পদার্থ। মানব দেহের জন্য এগুলো অত্যান্ত ক্ষতিকর। বিষাক্ত এ পদার্থগুলো শরীরে প্রবেশ করে বিষক্রিয়া ঘটাচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা রকম বেদনাদায়ক ব্যাধিতে। প্রতিদিনের ইফতারে আমার মড়ি পেয়াজু আলুর চম বেগুনি জিলাপি সবজি বড়া বাজার থেকে কিনে থাকি। সাথে চিনি বাতাবি লেবু ও রূহআবজাহও কিন্তু কেনার সময় আধো ভাবি না যে সারা দিন রোজা রেখে আমরা ইফতার করতে কি কিনতে নিতেছি বাসায়। সু¯স্বাদু এই ইফতার সামগ্রী আকর্ষণীয করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকারক সিনথেটিক রং। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোতে লাল রং মেশানো হয়। সাধারণত নির্দিষ্ট মাত্রায় খাবারের রং মেশানোর নিয়ম থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় (প্রতি কেজি ৪ হাজার টাকা) ব্যবসায়ীরা কম দামি কাপড়ে ব্যবহৃত রং (প্রতি কেজি ২০০ টাকা) খাবারে ব্যবহার করছে। এমনকি যে তেলে এগুলো ভাজা হচ্ছে তাতে মবিল ব্যবহার করা হচ্ছে এর ফলে খাবার মচমচে হচ্ছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, কম দামি টেক্সটাইল রং কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তা ছাড়া মবিলের ভাজা খাবার খেলে দীর্ঘস্থায়ী ভাবে দেহের ক্ষতি হয়। এতে ক্যান্সারের আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়া পরিপাকসংশিষ্ট বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গেরওক্ষতি হয়। পাড়া মহল¬ার অসাধু ব্যবসায়ী দোকানীরা গ্রাহকদের মন চাঙা করতেই বিষাক্ত রং ব্যবহার করে ইফতার সামগ্রীকে আবেদনময় করে রাখে। তাদের ভাবনা রং ব্যবহার না করলে খাবার রং সুন্দর হয় না। এতে ক্রেতারাও খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয় না। ইফতার সামগ্রীর মাঝে সবচেয়ে কম দাম সম্ভবত মুড়ি। এই মুড়ি ভাজতে ব্যবহার করা হয় বিষাক্ত হাইড্রোজ বা ইউরিয়া সার। মূলত মুড়িকে সাদা ও মোটা করতে ব্যবহার করা হয় এ বিষ। বাজারে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ফলের জুসে ফলের রস বা রসের নূন্যতম উপাদান না থাকলেও নির্দিষ্ট ফলের রং গন্ধ চিনি ও পানি মিশিয়ে জুস হিসেবে তা প্যাকেট বা বোতল জাত করা হয়। চিনির বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে ¯¬াইকোমেট নামকক্ষতিকর রাসায়নিক তরল পদার্থ। প্রতিদিনের ইফতারের সাথে ফল আর একগ্লাস দুধ না থাকলে নাই হয়। কিন্তু আতংকের বিষয় হল অত্যাবশ্যকীয় এ খাবার দুটিতে এখন মেশানো হয়ক্ষতিকর ফরমালিন। বিশেষ করে, আম, মাল্টা, খেজুর, আপেল, আঙ্গুর ও কমলায় এর ব্যবহার বেশি হয়। এছাড়ও আদর্শ খাবার দুধেও এ ক্ষতিকারক পদার্থ মেশানো হয়। আমাদের দেশের ফল মূলে এখন আর আগের মত স্বাদ পাওয়া যায় না। কার্বাইড ও বিষাক্ত ফরমালিন মেশনোর জন্যই এমন হয়। ফরমালিনযুক্ত ফল খাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে আমাদের কিডনী ও যকৃৎ নষ্ট হতে শুর“ করে। যার ফলে মানুষের মুখের ¯^াদও নষ্ট হয়ে যায়। আইসিডিডিআরবির গবেষণায় দেখা গেছে, ফল গাছে থাকা অবস্থায়ই ফরমালিন, কার্বাইডসহ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার শুর“ হয়।
রোগ তত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনষ্টিটিউটের গবেষণা রিপোর্ট মতে, পরীক্ষায় মানুষের দেহে আগের তুলনায় বেশি কার্বাইড, ফরমালিন, অর্গানো ফসফরাস ও হেভি মেটালের পরিমাণ পাওয়া গেছে। রোজায় এ রাসায়নিক পদার্থগুলো মানবদেহে আরো বেশি পরিমাণে প্রবেশ করে। যার কারণে মানুষের কিডনি ও যকৃৎ তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে পেলে। সার দিন রোজা রেখে আমরা স্বপরিবারে ইফতারে মাতি। হরেক রকম খাবার খাই। ইফতারের সময় প্রতিটি মুসলমানই আনন্দের সাথে ইফতার সামগ্রী খাই কিন্তু কি খাই আমরা কি ভাবি? বাজার থেকে কি ইফতারই বা কিনে আনি। একমাত্র ঠান্ডা মাথা অবিযান চালক বিষ ছাড়া তো আর কিছু না? সারা দিন ইবাদত করে কেন আমরা বিষ খাবো? আর যারা ইফতারের সুর“ত বিষ বিক্রি করে তাদের কেন শাস্তি যোগ্য বিচার হবে না? (এই প্রশ্ন পাঠকের কাছে।)
মোঃ সাইদুল হাসান ,জি নিউজ