সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদিপক্ষ- শেখ হাসিনা
জি নিউজ বিডি ডট নেট ডেস্ক :- মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করেছেন ব্রিটেন প্রবাসী বাংলাদেশী এক নাগরিক। ৩ জানুয়ারি দায়ের করা এ মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।মঙ্গলবার লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার আলী মুহাম্মদ আজহার এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মামলার বাদি শাহিন আহমেদ। তিনি জানান, “২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন অফিসার, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে জামায়াতে ইসলামীর একশ’রও বেশি নেতাকর্মী এবং ২০১৩ সালের ৬ মে শাপলা চত্বরে হেফাজত নেতাকর্মীদের হত্যাকাণ্ড, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বিরোধী দলের কয়েকশ’ নেতাকর্মী ও অসংখ্য সাধারণ মানুষ গুম, গত ৫ বছরে সাগর-রুনিসহ প্রায় ২০ জন সাংবাদিক খুন, ক্রসফায়ারের নামে রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী হিসেবে শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।” সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিপর্যয় ঘটেছে। গুম-খুন-হত্যা-নির্যাতনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে প্রিয় মাতৃভুমি। আইনের শাসন সেখানে সুদূর পরাহত আর ন্যায়বিচার স্বপ্নেরও অতীত। সাধারণ মানুষের প্রতিটি দিন কাটে অনিশ্চিত অন্ধকারকে সামনে রেখে। দেশ চলছে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বিপথগামী সহযোগীদের ইচ্ছে-খামখেয়ালী-মাতলামোতে। তাদের আচরণ হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর কর্মকাণ্ডকে হার মানিয়েছে।” মামলার বাদি জানান, দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে তিনি এই মামলা করেছেন। মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সেক্রেটারি সিকিউএম মোস্তাক আহমেদ, বিজিবির মহাপরিচালক জেনারেল মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর ডিজি মো. আকবর হোসেন, পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খোন্দকার, র্যাবের ডিজি মোখলেছুর রহমান, বিজিবির যশোর রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সামছুর রহমান, সেনাবাহিনীর ৪৬ বিগ্রেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুজিবুর রহমান, র্যাবের অতিরিক্ত ডিজি কর্ণেল জিয়াউল আহসান, কমান্ডিং অফিসার লেফটেনেন্ট কর্ণেল মো. মতিউর রহমান, কমান্ডিং অফিসার লেফটেনেন্ট কর্ণেল কিসমত হায়াত, কমান্ডিং অফিসার লেফটেনেন্ট কর্ণেল ইমরান ইবনে এ রউফ, ডিজিএফআইয়ের স্পেশাল অপারেশন ইনচার্জ মখছুরুল হক ও ডিজিএফআই ইন্টারন্যাল ব্যুরো ডিরেক্টর মো. সিরাজুল ইসলাম শিকদার।
এর আগে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলা দায়ের করেন ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা। ওই মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ততকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমদকে আসামী করা হয়। একই বছরের ৩১ জানুয়ারি হত্যা, অপহরণ, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ ৫টি অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিক তাজউদ্দিন, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, দেওয়ান এএম চৌধুরী, মোহাম্মদ শামিম হুসাইন ও বাহাউদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ততকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, পুলিশের সাবেক আইজি নূর মোহাম্মদ, বর্তমান আইজি এইচএম খন্দকার ও র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উত্থাপন করেন। সূত্র- রেডিও তেহরান #