সাতক্ষীরায় জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ ৩ নেতার সুপারিশ নিয়ে তোলপাড়!

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃচলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারী থেকে পর্যায়ক্রমে জামায়াত শিবিরের নারকীয় তান্ডব ও জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে সরকারি গাছ কেটে তা সড়কে ফেলে অবরোধের ঘটনায় জেলা পরিষদ কর্তৃক ১৫টি মামলায় ৪০১ জন আসামীর মধ্যে থেকে ৫৪ জন কে অব্যাহতি দেয়ার সুপরিশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের তিন নেতা। গত ৭ জুলাই পুলিশ সুপার ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে লিখিতভাবে এ সুপারিশ করা হয়। পুলিশ সুপার কার্যালয়ের জাকির হোসেন এবং সদর থানার রেখা পাল এ সুপারিশ পত্র রিসিভ করেছেন। সুপারিশ পত্রে বলা হয়েছে, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ থেকে প্রেরিত এজাহারের প্রেক্ষিতে  সাতক্ষীরা থানায় ৮ মার্চ ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, এবং মার্চ ৩০, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬ ও ৩৭ নং মামলা দায়ের হয়। ১৫টি মামলায় আসামীর সংখ্যা ৪০১ জন। ১৫টি পৃথক স্থানে একই দিন সরকারি গাছ কেটে সাবাড় করে জামায়াত শিবির। ২৮ ফেব্র“য়ারী যুদ্ধাপরাধের মামলায় দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর সরকারি রাস্তার গাছ কেটে অবরোধ করে জামায়াত শিবির। এতে গোটা জেলায় তারা নারকীয় তাÊবলীলা চালায়।

সুপারিশ পত্রে বলা হয়েছে, ১৫টি ঘটনায় জড়িত অধিক সংখ্যক আসামীর সঠিক নাম ঠিকানা ও তথ্য সংগ্রহ পূর্বক এজাহার দাখিলের সময় কিছু ত্র“টি থেকে যায়। যা পরবর্তীতে ধরা পড়ে। এতে ৫৪ জন এজাহার নামীয় আসামী প্রকৃতপক্ষে  ঘটনার সাথে জড়িত নয় এবং ভূল তথ্যের ভিত্তিতে তাদের নাম অন্তরর্ভূক্ত হয়েছে বলে ছাফাই গেয়েছেন আওয়ামী লীগের এ তিন নেতা। অথচ স্থানীয় সূত্র জানায়, যাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই গাছ কর্তন ও আত্মসাতের সাথে জড়িত। আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের কিছু নেতা এসব আসামীদের পরিবারের নিকট থেকে হাজার হাজার টাকা নিয়ে র্র্শীষ নেতাদের কাছে সুপারিশ করেছেন। এতে করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।

এলাকাবাসী জানান, গত ৩ ও ৪ মার্চ জামায়াত-শিবির সাতক্ষীরা-চাপড়া সড়কে গাছ কাটলে তার অধিকাংশই ধুলিহর গ্রামের মহিউদ্দিন সরদারের ছেলে মিনাজ সরদার (২২) ও তার বাহিনীর সদস্যরা আত্মসাত করে। একই গ্রামের আব্দুল জলিল থান্দারের ছেলে আজিজুল ইসলাম ও গাছ কাটার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে জানায় এলাকাবাসী। এই আজিজুল ইসলাম ব্রহ্মরাজপুর বাজারে প্রকাশ্যে মিছিল করে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলো। বালুইগাছার ছাদেক থান্দারের ছেলে ইয়াছিন আলীও গাছ কাটার সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানায় এলাকাবাসী। এমনিভাবে কেউ গাছ কাটার সাথে আবার কেউ গাছ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে। অথচ এসব ব্যক্তিদের পক্ষে ছাফাই গেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। সূত্র জানায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতা এসব আসামীদের নিকট থেকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে আসামীদের পক্ষে সুপারিশ করেছেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের ভুঁইফোড় নেতাদের কথা রাখতে গিয়ে পুলিশের কাছে মামলা থেকে ৫৪ জন আসামীকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করেছেন। এলাকাবাসী জানান, যারাই তাদের মামলায় ঢুকিয়েছে তারাই আবার আর্থিক সুবিধা নিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন। এতে এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বলে জানাগেছে।

সুপারিশ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক মুনসুর আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নজর“ল ইসলাম এবং সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম শওকত হোসেন।

কাজী নাসির উদ্দীন/ সাতক্ষীরা/জি নিউজ

Exit mobile version