আন্তর্জাতিক ডেস্ক:- ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি নির্বাচন কেমন হয়– সেদিকে আগ্রহের সাথে দৃষ্টি রাখছে জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সোমবার রাতে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এসব বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আগামীকাল ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এই নির্বাচন যেন ‘স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ‘ হয় সে জন্য গতকালই আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল থেকে এর আগে থেকে এতটা আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু এবারের নির্বাচনের দিকে কেন তাদের এতটা নজর?
ঢাকায় বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে যোগাযোগ আছে এমন অনেকে বলছেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেপটের কারণেই এ নির্বাচন গুরুত পাচ্ছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার যে বহমানতা – তা বাধাগ্রস্ত হওয়াতে সহিংসতার একটা প্রবণতা সাম্প্রতিককালে দেখা গেছে। সে কারণে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটা অংশ হিসেবে এ নির্বাচনকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনকারী বাংলাদেশের বৃহত্তম বিরোধীদল বিএনপি এবছরের শুরু থেকেই নতুন নির্বাচনের দাবিতে অবরোধ–হরতাল ডেকে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
একে কেন্দ্র করে সারা বাংলাদেশে কযে কমাস জুড়ে ব্যাপক অচলাবস্থা এবং সহিংসতা চলে – যাতে বহু লোকের মৃত্যু হয়। তৈরি হয় এক গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, তবে অনেকটা হঠাৎ করেই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হবার পরই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। টানা অবরোধ–হরতাল ইত্যাদি কর্মসূচি বন্ধ হয়, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয় থেকে বাড়ি ফিরে যান। দুর্নীতির মামলাতে তিনি জামিন পান, নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় খুলে দেয়া হয়। অনেকে মনে করেন সরকার ও বিএনপির মধ্যে এক ধরণের সমঝোতার ফলাফল, যদিও কোন দলই এ কথা স্বীকার করে নি।
এর পেছনে বিদেশী কূটনীতিকদের ভুমিকা ছিল বলেও মনে করেন অনেকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক তারেক শামসুর রেহমান বলেন, এই নির্বাচন দুপক্ষকেই রাজনৈতিকভাবে নমনীয় হবার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে এ নির্বাচন প্রভাব ফেলবে। কারণ এর মধ্যে দিয়ে বিএনপিকে সহিংস পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবার সুযোগ এনে দিয়েছে। সরকারও চাইছিল তাদের রাজনৈতিক মূলধারায় নিয়ে আসতে তাই দু পক্ষের জন্যই এটা ছিল প্রয়োজনীয়।
রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলছেন, এখন যদি শান্তিপূর্ণভাবে এবং নির্ভয়ে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন তাহলে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল সেটা কেটে যাবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতিধারার জন্য এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ ব্যাপারে আগ্রহী বলে তারা মনে করছেন।