আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ- সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর বিজয়ের একই সময়ে বিদেশি মদদপুষ্ট এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য ও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সিরিয়ার সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানকারী বিদ্রোহী নেতাদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্রোহীদের গ্রুপ সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল বা এসএনসি’র নেতারা বৈঠক করেছেন। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গোলযোগ শুরু হওয়ার পর সৌদি আরব, তুরস্ক, কাতার ও আমেরিকার সহায়তায় ৮০টির বেশী দেশ থেকে অসংখ্য সন্ত্রাসী সিরিয়ায় প্রবেশ করে এবং সিরিয়ার সরকার উৎখাতের জন্য তারা দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়। বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রধান দু’টি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হচ্ছে আল-কায়দা সমর্থিত ইসলামিক স্টেট অভ লিভান্ট বা আইএসআইএল এবং আন্ নুসরা ফ্রন্ট। সম্প্রতি সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দেইর আয্ যুর এলাকায় সেনাবাহিনীর কাছে চরমভাবে পরাজিত হওয়ার পর এ দু’টি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে এবং এখন তারা একে অপরকে হত্যা করছে। গত কয়েকদিনে দেইর আয্ যুরের আশে পাশের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল ও আন্ নুসরার মধ্যে প্রচণ্ড সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছে। সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর পরিচালনা বা নেতৃত্ব দান এবং নিজেদের প্রভাবিত এলাকায় ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়েই মূলত এসব মতবিরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সন্ত্রাসীদের নিজেদের মধ্যকার অন্তর্দন্দ্ব, সরকারী সেনাবাহিনীর কাছে তাদের সামরিক পরাজয় এবং বহু এলাকা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ায় বাইরে অবস্থিত বিদ্রোহী নেতাদের মধ্যেও ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আইএসইএল থেকে কয়েকজন নেতা বেরিয়ে যাওয়ায় এবং এ জোটের নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের জন্য পাঠানো বিদেশি ত্রাণ সামগ্রী চুরির অভিযোগ ওঠার পর তারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। সিরিয়ার বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতি অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় এবং যুদ্ধের ময়দানে বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা পরাজিত হওয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে যারা উৎখাতের পরিকল্পনা করেছিল তারা এখন অচলাবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। অন্তকোন্দল দূর করার জন্য বিদ্রোহীদের নেতারা একাধিক বৈঠক করেও এবং আইএসআইএল’র নেতারা বিভিন্ন দেশে দৌড়ঝাঁপ করলেও নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসীদের ব্যাপক অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য দিয়ে তিন বছর ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এখন এটা প্রমাণিত হয়েছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাতের জন্য পাশ্চাত্যের পরিকল্পনা ছিল বড় ভুল। এ প্রতিবেদনটি রেডিও তেহরান এর,বিদেশি মদদপুষ্ট এসব সন্ত্রাসীরা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেলেও সিরিয়ার সরকার এখনো শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে এবং দেশটি বর্তমানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।