আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ- সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে একটি ফার্নিচার কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯ বাংলাদেশিসহ ১১ জন মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছেন। নিহত অন্য দুই জন ভারতীয় নাগরিক। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে রিয়াদের শিফা সানাইয়া এলাকায় বাংলাদেশি মালিকানাধীন ফার্নিচার কারখানায় ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কারখানায় মোট ১৫ জন শ্রমিক থাকতেন। এর মধ্যে ১৩ জন বাংলাদেশি ও দুইজন ভারতীয়। নিহত ৯ বাংলাদেশির মধ্যে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকার সাতজন। এরা হলেন- মো. জালাল (৩৬), নাজির হোসেন (৩৫), আব্দুল গাফফার (৩৫), মোহাম্মদ (৩৫), বাহাউদ্দিন (৩১), শাহ আলম (৩৬) ও মতিউর রহমান (৩৩)।অপর দুইজনের মধ্যে জাকিরের (৫৫) বাড়ি ফেনী ও আফতাবের (৫০) বাড়ি মাদারীপুর জেলায়।নিহত দুই ভারতীয় নাগরিক হলেন- ইসরার (২৫) ও ওয়াসিম (৩০)। ঘটনার পর থেকে তিতাস সোফা ফ্যাক্টরির মালিক রাজু উদ্দীন পলাতক। তাকে ধরার জন্য বেঁচে যাওয়া আব্দুল হান্নানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সৌদি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, রাত ৮টায় ডিউটি শেষে ফ্যাক্টরির ভেতরে কেউ রান্না, কেউ টিভি দেখায় ব্যস্ত ছিল। আনুমানিক ১০টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। কিছু টের পাওয়ার আগেই পুরো ফ্যাক্টরিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভেতরে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম থাকলেও তা ব্যবহার করার সুযোগ পায়নি হতভাগ্য শ্রমিকরা। অগ্নিকাণ্ডে বেঁচে যাওয়া শ্রমিক আব্দুল হান্নান জানান, কারখানায় কর্মরতদের মধ্যে পাঁচ বাংলাদেশি বেরিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু মোবাইল আনতে গিয়ে ভেতরে আটকে পড়েন শাহ আলম। পরে আর বেরিয়ে আসতে পারেননি তিনি। লাশগুলো গেইটের ভেতর পড়ে ছিল। লাশগুলোর অবস্থান নিশ্চিত করে যে, বেঁচে যাওয়ার আকুতিতে সবাই গেইটের পাশে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি কারোরই। ঘটনার প্রায় সাত ঘণ্টা পর সৌদি ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ১১ জনের লাশ বের করে আনলেও পুড়ে কয়লা হওয়া মৃত দেহগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটা বাংলাদেশি, কোনটা ভারতীয়। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুড়ে কয়লা হওয়া লাশগুলোর ডিএনএ টেস্ট করে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব (শ্রম) মো. মিজানুর রহমান আজ (মঙ্গলবার) সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগুনে ১১ জন মারা গেছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। খবর-রেডিও তেহরান এর,মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিক রয়েছেন।’