৫ই জানুয়ারির নির্বাচনেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে -নাগরিক ঐক্য

জি নিউজঃ- মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় চেতনা হচ্ছে গণতন্ত্র। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্য। গতকাল বিকালে রাজধানীর তোপখানায় অনুষ্ঠিত নাগরিক ঐক্য আয়োজিত আলোচনা সভায় এ সব বলেন । গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে সভায় সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য এদেশের মানুষ যুদ্ধ করেছে। অতীতে অনেক সংগ্রাম করে গণতন্ত্র রক্ষা করতে হয়েছে। গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ শুধু সংবিধানেই আছে বাস্তবে নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সৈয়দ আবুল মকসুদ আরও বলেন, আমাদের নেতৃবৃন্দ কথায় কথায় গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদের কথা বললেও বাস্তবে তা নেই। সভাপতির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের রাষ্ট্র, জাতীয় সংগীত ও পতাকা নিয়ে কুৎসিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কেউ একজন স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, কেউ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। কেউ একজনের জন্ম না হলে দেশ স্বাধীন হতো না এরকম কথা বলার প্রবণতা শুরু হয়েছে। এখন বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট নিয়ে। কেড়ে নেয়া হয়েছে ভোটের অধিকার। তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফেরি করছেন। ৪৩ বছর পর এ হচ্ছে স্বাধীনতার চেতনা। এভাবে দেশ চলতে পারে না মন্তব্য করেন তিনি  ।জাতীয় সংগীতকে পণ্য করা হয়েছে মন্তব্য করে সাংবাদিক গোলাম মোর্তজা বলেন, কার চুল, নখ সবচেয়ে বেশি লম্বা, কে সাত তলা বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়েও সুস্থ থাকতে পারে তা গিনেস বুকে রেকর্ড হয়। কোন ব্যক্তি এর পেছনে দৌড়াতে পারে কিন্তু কোন স্বাধীন সার্বভৌম দেশ এর পেছনে দৌড়াতে পারে না। অথচ লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার নামে বাণিজ্য করা হয়েছে। জাতীয় সংগীতকে পণ্য করা হয়েছে। তার আগে গত বছর জাতীয় পতাকাকেও পণ্য করা হয়েছিল। জাতীয় সংগীত গাওয়ার জন্য ৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এর কাজ দেয়া হয়েছিল সংস্কৃতিমন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানকে। এটি একটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়া কিছুই নয়। জাতীয় সংগীত গাওয়ায় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, সেখানে দেড় লাখ পোশাক শ্রমিক ছিলেন, লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় আনা হয়েছে।এছাড়া  অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আমরা স্বাধীন থাকলে ভারতে যা করতে পারেনি পরিবেশ ধ্বংসকারী সেই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমাদের দেশে হতো না। আমরা স্বাধীন থাকলে অন্য দেশের পররাষ্ট্রসচিব এসে বলতেন না আমাদের দেশের নির্বাচন কিভাবে হবে। নির্বাচনে কে থাকবে বা কে থাকবে না। যে দল স্বাধীনতার চেতনা ও গণতন্ত্রের কথা বলে সেই দলই আজ গণতন্ত্রকে হত্যা করে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়। ভোট দিতে গেলে ভোটকেন্দ্র থেকে মেরে বের করে দেয়া হয়। সে দল যখন লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের আয়োজন করে তখন বুঝতে হবে এতে অপরাজনীতি আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।নাগরিক ঐক্য আয়োজিত আলোচনা সভায় পরিচালনা করেন ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সভায় বক্তব্য রাখেন, লেখক-গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, , সাংবাদিক গোলাম মোর্তজা, অধ্যাপক আসিফ নজরুল,গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, প্রমুখ।

Exit mobile version