স্পোর্টস ডেস্কঃ-টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৭৩ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ১৭২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টাইগাররা। দায়িত্ব জ্ঞানহীন শট খেলার পাশাপাশি ক্যারিবিয়দের নিপূণ বোলিং তাদের এ হার ত্বরান্বিত করে। বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তিনি ২২ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২২ রান করে স্যামুয়েল বদ্রির শিকার হন। এছাড়াও মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৯, মুমিনুল হক ১৬ ও সোহাগ গাজী ১১ রান করেন। স্যামুয়েল বদ্রি ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে অসামান্য সাফল্য আদায় করে নেন। তিনি শেষ ওভারে ৩৪ উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের মেরুদন্ড গুড়িয়ে দেন। এছাড়াও ক্রিশমার স্যান্টোকি ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন। এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার ক্রিস গেইল এবং ডোয়াইন স্মিথের চমৎকার ব্যাটিংয়ে বিশাল লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১২তম ওভারে এসে প্রথম সাফল্যের দেখা পায় টাইগার বোলাররা। অফ স্পিনার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সাজঘরে ফেরান মাত্র ৪৩ বলে ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা ওপেনার ডোয়াইন স্মিথকে। স্মিথের এ অনবদ্য ইনিংসে ১০ চার ও ৩ ছক্কার মার ছিল। এ সময় ১১.৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৯৭ রান।পরের ওভারেই সাকিব চাতুর্যের সঙ্গে ওয়াইড বল করে ফেরান লেন্ডল সিমন্সকে। ইনিংসের ১৯তম ওভারে জিয়াউর রহমান ফেরান বিপক্ষের বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলকে। ৪৮ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৮ রান করে তিনি লং অনে তামিমের তালুবন্দী হন। ইনিংসের শেষ ওভারে অসাধারণ বোলিং করে শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১৭১ রানে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। ওই ওভারে প্রথম দুই বলেই উইকেট তুলে নেন পেসার আল আমিন হোসেন। প্রথম বলে মারলন স্যামুয়েলসকে ফেরানোর পর দ্বিতীয় বলেও তিনি ফেরান আন্দ্রে রাসেলকে। এক বল পরেই তামিম ইকবাল অসাধারণ এক ক্যাচ ধরে সাজঘরে ফেরান অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভোকে। আর ইনিংসের শেষ বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন উইকেটরক্ষক দিনেশ রামদিন। ফলে শেষ ওভারে মাত্র ৪ রানের খরচায় ৩ উইকেট তুলে নেন আল আমিন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসরের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে চাপের মুখে ছিল। এ ম্যাচ জিতে প্রতিযোগিতায় ভালোভাবেই ফিরে এলো তারা। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বলেন, ‘দর্শকদের জন্য এই পারফরম্যান্স মেনে নেয়াটা খুবই কষ্টের। আমি তাদের জন্য খুবই দুঃখিত। তারা টাকা-পয়সা খরচ করে দূর-দূরান্ত থেকে খেলা দেখতে আসে। তারা আমাদের মন খুলে সমর্থন করে। এই পারফরম্যান্স সত্যিই দর্শকেরা প্রত্যাশা করে না। পরপর দুটো ম্যাচে একেবারে যাচ্ছেতাই ব্যাটিং পারফরম্যান্সের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের কমপক্ষে পাঁচ-ছয়জন খেলোয়াড় এই মুহূর্তে একসঙ্গে ভালো খেলতে পারছে না। খেলোয়াড়েরা এসব নিয়ে খুব বেশি ভাবছে। যেহেতু এটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। নেমেই মেরে খেলতে হয়। তাই খেলোয়াড়েরা যদি এত কিছু না ভেবে নিজেদের খেলাটা খেলে তাহলেই সবচেয়ে ভালো হয়। পরবর্তী ম্যাচে দলের প্রত্যাশা সম্পর্কে মুশফিক বলেন, ‘পরের তিন ম্যাচে আমাদের খেলতে হবে ভারত, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দলের যা অবস্থা, তাতে হারা-জেতার বাইরে গিয়ে আমি চাই দল এই তিনটি ম্যাচে যেন একটু ভালো খেলে। আজকের খেলায় ম্যাচের সেরা হন ৪৩ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ৭২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলা ডোয়াইন স্মিথ। সূত্র- রেডিও তেহরান।