তাড়াশে ১৫ গ্রামে খিরা চাষে বিপ্লব

তাড়াশ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে খিরার ভরা মৌসুমে বাজার জমে উঠেছে। এ মৌসুমে মাত্র ১৫ গ্রামের খিরা চাষীরা প্রায় ৩ কোটি টাকা খিরা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। আগাম খিরার আবাদ করে লাভের মুখ দেখতে পেয়ে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটে উঠেছে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এ বছর প্রায় ৫শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের খিরা চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে বারুহাস ও তালম ইউনিয়নে খিরা চাষে উপযুক্ত পলি দো-আঁশ মাটিতে সর্বাধিক কৃষক খিরার আবাদ করেছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিজানুর রহমান জানান, এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৪০-৪৫ মণ খিরার ফলন পাওয়া যাচ্ছে। মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসে খিরার ফলন পাওয়ায় খিরা চাষী কৃষকদের লাভের পরিমান বেশি। কেননা একটি খিরার জমি থেকে বছরে অন্তত: ৩-৪ বার কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ খিরা পাওয়া সম্ভব।
কৃষি বিভাগের হিসাবে তাড়াশ উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় আড়াই হাজার টন খিরা পাওয়া যাবে। বর্তমান পাইকারি বাজার মূল্য ১০-১৫ টাকা কেজি দরে হলেও প্রায় ৩ কোটি টাকা আয় করবেন। এর মধ্যে দিঘরিয়া, মনোহরপুর, পালাশী, বারুহাস, কুসুম্বী, বিনোদপুর, বস্তুল, নামা সিলট, উপ-সিলট, রানীদিঘীসহ ১৫টি গ্রামে কৃষক খিরা বিক্রির প্রায় ৩ কোটি টাকা পাবেন বলে আশা করছেন। স্থানীয় কৃষক ময়নুল জানান, আগাম খিরা চাষের কারণে কৃষক ভাল দামও পাচ্ছেন। কৃষক তাহের হোসেন জানান, তিনি ৭ বিঘা জমিতে খিরার চাষ করেছেন। প্রতি বিঘাতে খরচ হয়েছে ৮-৯ হাজার টাকা। আর তিনি বিক্রি করছেন প্রতি বিঘায় উৎপাদিত খিরা ২০-২৫ হাজার টাকা। কুসুম্বী গ্রামের কৃষক আলতাব আলী জানান, মাত্র ৩ মাসে খিরা চাষে কৃষক বিঘা প্রতি যে টাকা খরচ করেন, উৎপাদিত খিরা বিক্রি করে তার প্রায় দ্বিগুণ লাভ করেন। খিরা চাষে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলহানির সম্ভাবনা কম থাকায় খিরা চাষী কৃষক লাভের মুখ দেখতে পারছেন। তাড়াশের বারুহাস, বিনোদপুর, দিঘরিয়া, পালাশী, পওতা, মনোহরপুর, কুসুম্বী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ১২-১৫টি গ্রামের মাঠে কৃষক জমি থেকে খিরা তুলে জমিতেই মহাজনদের বর্তমানে কাছে ৪০০-৪৫০ টাকা মণ দরে বিক্রয় করছেন। তাড়াশের কৃষকের এ বছর প্রচুর উৎপাদিত খিরা কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মহাজনরা আসছেন এবং ট্রাক বোঝাই করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সম্পাদনা/শাবানা মন্ডল /০২.১৩ঘ /১মার্চ

Exit mobile version