স্টাফ রিপোর্টার, জি নিউজ : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতান্ত্রিক অবস্থায় বিএনপির দম বন্ধ হয়ে আসে; এজন্যই দলটি সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানায়। শেখ হাসিনা বলেন, অনেক কষ্ট করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। দেশের জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কোন পরিবেশে থাকতে চায়। বিরোধী দল ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে তাদের প্রতিরোধ করার আহ্বানও জানান।
শেখ হাসিনা গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে গতকাল তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে বিরোধী দল অন্তর্ঘাতি কর্মকা-ের মাধ্যমে দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। ধ্বংস করতে যত রকমের কর্মকাণ্ড – করা দরকার তারা তা করে যাচ্ছে। শুধু সরকারের বিরুদ্ধে নয়; বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করতে এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন যেতে না পারে সেজন্যও তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লালমনিরহাটের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের কী অপরাধ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হামলা কেন? মেডিক্যালের শিক্ষার্থীর কী অপরাধ তার বোমায় তার চোখ নষ্ট হল কেন? ছোট বাচ্চার উপর বোমা মারছেন, পুলিশকে পিটিয়ে ও বোমা মেরে হত্যা করছেন। বিরোধী দলের এসব ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবেলায় দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে আহত শিক্ষার্থীকে আমি ঢাকায় নিয়ে এসেছি। শিবিরের হামলায় আহত পুলিশ সদস্যকেও ঢাকায় নিয়ে এসেছি উন্নত চিকিৎসার জন্য। তিনি বলেন, এই পুলিশ সদস্য হাত দিয়ে বোমাটিকে না ধরলে অনেক মানুষ হতাহত হত। এসময় পুলিশ সদস্যের দুই হাত মারাত্মকভাবে জখম হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এস এস সি পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে তাদের শিক্ষা জীবন ব্যাহত করেছেন। উনি চাননা জাতি শিক্ষিত হোক। সচেতন হোক। উনি চান সবাই তার মতো স্বশিক্ষিত থাকুক।
বিরোধী দলীয় নেতার সমালোচনা করে সরকার প্রধান বলেন, উনি যেখানে ট্যুরে (সফর) যাবেন তার আগে সেখানে মন্দির ভাঙ্গেন। পরে সমবেদনা জানান। আগে কাটেন পরে মলম লাগান। তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলের মতো জয় বাংলা বলে অনেক সময় মন্দিরে হামলা চালানো হয় আমাদের ঘাড়ে দোষ দেয়ার জন্য। উনার কথায় তা ধরা পড়ে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, মহানবীকে নিয়ে কোনো কূটক্তি বরদাশত করা হবেনা। সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। এর জন্য কোনো আন্দোলন করতে হবেনা। আমরাও তো মুসলমান। ইসলাম নিয়ে কেউ কটাক্ষ করলে আমাদের অনুভূতিতেও আঘাত আসে। আমার ধর্মের মর্যাদা কীভাবে রক্ষা করতে হবে তা ভাল করেই জানা আছে। এজন্য আমরা ইউ টিউব বন্ধ করে দিয়েছি। এর জন্য তো কারো কোনো আন্দোলন করতে হয়নি।
ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকা ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় পর্যাপ্ত ত্রাণ দেওয়া হয়নি- বিরোধী নেত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলায় কী করতে হবে তা কারো কাছ থেকে আমাদের শিখতে হবেনা। বিএনপি নেত্রী ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর বলেছিলেন ‘যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মরেনি’। আর আমরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। তাদের কেউ এখন খোলা আকাশের নিচে নেই। আমাদের হাতও আছে মনও আছে। বিরোধী নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উনি দেয়না কেন? কয়েক দিন আগে নাকি সিঙ্গাপুর থেকে অনেক টাকা নিয়ে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর স্বাগত বক্তব্য দেয়ার পর মাগরিবের নামাজের বিরতি দেয়া হয়। তারপর আবার শুরু হয় বৈঠক। দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ধ্বংস করতে যত রকমের কর্মকাণ্ড – করা দরকার তারা তা করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
Share This