মহিউদ্দীন ভান্ডারী,রাজাপুর (ঝালকাঠি)প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুরের বদনিকাঠি এলাকায় এক শিশুকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে সালিশ বৈঠকে বিচারে হাসিব সিকদার (১২) নামে এক কিশোরকে ১১০জুতা পেটা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোদ স্থানীয় এক মেম্বরের নির্দেশে তার চোখের সামনে বৈঠকে বসেই ওই কিশোরকে জুতা পেটা করা হয়। এতে হাসিব অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ওই শাস্তির পর ধর্ষনচেষ্টার অভিযোগে আটকের পর ভ্রাম্যমান আদালত হাসিবকে পনের দিনের সাজা প্রদান করার পর এ ঘটনা ফাস হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ১৮ আগষ্ট মঙ্গলবার রাতে বদনিকাঠি গ্রামের আব্দুস সত্তার সিকদারের ছেলে কিশোর হাসিব সিকদারের বিরুদ্ধে বাড়ির পার্শ্ববর্তী এক গৃহবধূ তার শিশুকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ তোলেন। এর পরের দিন ১৯ আগষ্ট বুধবার রাতে স্থানীয় মঠবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম তারেকের নেতৃত্বে স্থানীয় ইয়াকুব আলী খান, রশিদ সিকদার, মুনসুর সিকদার ও শিশু দাদা ইসমাইল সিকদার এ ঘটনার সালিশ বৈঠকে বসেন। সালিশে তারেক মেম্বর ওই কিশোরকে ১১০ জুতা পেটা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। বুধবার রাতে ওই গৃহবধূর ঘরে বসেই তারেক মেম্বর স্থানীয় কবির সিকদারকে তার পায়ের জুতা খুলে কিশোরকে পেটানোর নির্দেশ দেন। কবির সিকদার এসময় গুনে গুনে ১শত জুতা পেটা করলে ওই কিশোর অজ্ঞান হয়ে পড়ে তার মুখ থেকে লালা বের হয়ে যায়। এ অবস্থায়ই ওই কিশোরকে আরো ১০ জুতাপেটা করা হয়। পরে অসুস্থ অবস্থায় কোলে করে ওই কিশোরকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়। তবে তখন কিশোরের পরিবার জরিমানার ১০ হাজারের পরিবর্তে আট হাজার টাকা নগদ প্রদান করলেও গৃহবধূ তা গ্রহণ করেননি।
হাসিবের চাচা আ. আজিজ সিকদার বলেন, ‘একটা মিথ্যা অভিযোগে আমার ভাইর ছেলেকে জুতাপেটা করে বিচার করা হয়। কিন্তু এর পরেও আবার তাকে একই অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা দেয়া হয়। এটা কিশোর হাসিবের ওপর অবিচারের শামিল। আমি এ ঘটনার তদন্ত করে সঠিক বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে তরিকুল ইসলাম তারেক মেম্বর বলেন, ‘আমি ওই ঘটনায় ইসলামিয়া শরীয়াহ সোতাবেক জুতাপেটা করে তার বিচার করেছি। তবে এরপরেও শিশুর মা থানায় অভিযোগ করেছেন। তাই এরপর আমরা আর কোন পদক্ষেপ নেইনি।’
রাজাপুর থানার ওসি (তদন্ত) হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় কোনভাবেই গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিচার করা সম্পূর্ণ অবৈধ। তবে এ ঘটনায় থানা পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবে।’