অনলাইন ডেস্কঃ- রাজধানী ঢাকায় গত শনিবার অল্প সময়ের ব্যবধানে দু’টি সন্ত্রাসী হামলায় একজন প্রকাশককে হত্যা ও তিনজনকে গুরুতর আহত করার পর গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দৃঢ়তার সাথেই বলেছেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি। সব দেশেই এ রকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আনসারুল্লাহ,জেএমবি বা আইএসআইএল- যারা এটা করুক না কেন তারা যুদ্ধাপরাধী বা জামায়াত-শিবিরের লোক।
এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন,‘গোপন-অতর্কিত হামলা থেকে কেউই নিরাপদ নয়, আমিও নই।’ তিনি বলেন,পুলিশ নাশকতা দমনে যেভাবে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে সেভাবে ধর্মান্ধগোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে দক্ষতা দেখাতে পারেনি।
দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরই মধ্যে অভিজ্ঞ তদন্ত দল কাজ শুরু করেছে।
গতকাল রোববার ঢাকার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের এক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। হত্যার রহস্য যাতে দ্রুত বের হয়, সে ব্যাপারে কাজ শুরু হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাজধানীর শাহবাগে আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটের জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপনকে নিজ কার্যালয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ছাড়া প্রায় একই সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি প্রকাশনীর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে নিহত ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক এবং দুই ব্লগারকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলায় আহত হন শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশিদ টুটুল, লেখক, গবেষক ও ব্লগার সুদীপ কুমার ওরফে রণদীপম বসু এবং তারেক রহিম।
এদিকে,দুই বাংলাদেশে ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর’আবারও হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ডব্লিউ ওয়াটসকিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি পিয়েরে মায়াদুন এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডব্লিউ গিবসন।
এ ছাড়া, লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে বাংলাদেশে আরো অনেকের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ রকম ভয়াবহ ও টার্গেট করা হামলা থেকে অন্যদের সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছে এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল।