সাতক্ষীরা প্রতিনিধি,জি নিউজ: খোড়া অজুহাত দেখিয়ে কোন আলোচনা ছাড়াই দুই দফায় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা খরজের নামে পকেটস্থ করার ঘটনায় চরম অসšে—াষ বিরাজ করছে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনে।সংগঠনটির প্রথম সারির দুই কর্মকর্তা ও সঙ্গে থাকা আরও ২ জনসহ কোষাধাক্ষ্যর বির“দ্ধে খরজের নামে এই টাকা লুটপাট করার অভিযোগ সংগঠনের সাধারণ সদস্যদের। অভিযুক্তদের নানাবিধও দূর্ণীতিসহ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ইতোমধ্যে সংগঠনটি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে যেকোন সময় কমিটি ভেঙ্গে যাবার সুর বেশ কিছুদিন ধরেই উঠেছে বন্দর অভ্যš—রে।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের দায়িত্বশীল কয়েকজন সদস্যরা জানান, বিগত এপ্রিল মাসে সংগঠনটির সভাপতি নেছার উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম বর্তমান সময়ের কথিত বন্দর নিয়ন্ত্রক রবিউল ইসলাম ও জনৈক খান ঢাকায় যান। তিন দিন ঢাকায় থেকে সাতক্ষীরা য় ফিরে এসে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকার খরজের ভাউচার জমা দেন সংগঠনে। যথারিতি কাউকে বুঝে উঠার আগেই ক্যাশিয়ারের নিকট থেকে উক্ত টাকা তুলে নেয়া হয়। এনিয়েই শুর“ হয় চাপা ¶োভ আর নানা গুঞ্জন। সে ঘটনা ধামা পড়তে না পড়তেই গত ১৮ মে ভোমরা বন্দরে পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর ঘোষনা দিতে আসেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খান। উদ্বোধন উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত একটি সমাবেশ হয় সেখানে।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, মন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষবেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সার্বিক দায়িত্ব ছিল তাদের। সূত্রগুলো জানায়, স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষও বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ আয়োজিত অনুষ্ঠানের সামুগ্রীক খরজ বহন করেন। এব্যাপারে ভোমরা বন্দরের কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ এবং সহকারি কমিশনার তাদের উপর কোন চাপ ছিলনা বলে তৎকালিন সময়ে তারা অনেকের কাছে জানিয়েছিলেন। আয়োজনের সময় কেহ কিছুই জানতে পারেনি বা দেখেনি যে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কোন দায়িত্ব ছিল। অথচ অনুষ্ঠান শেষে দেখে গেছে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস’র কতিপয় ৪ নিয়ন্ত্রক গত ২ সপ্তাহ আগে মন্ত্রীর আগমন এবং ব্যায় দেখিয়ে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকার খরজের ভাউচার দাখিলের পাশাপাশি উক্ত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। গত ৩ জুন এসোসিয়েশনের মিটিং থেকে সদস্যরা বিষয়টি জানার পর হতবাক হবার পাশাপাশি কঠোর ভাবে সন্দেহের উদ্রেক সৃষ্টি করেছে সাধারণ সদস্যদের মাঝে। এনিয়ে ফের অসšে—াষ চলছে সংগঠনের কর্মকর্তাদের মধ্যে। সংগঠনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা এব্যাপারে সেলফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা হাসতে হাসতে বলেই ফেললেন ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন এখন “ভোমরা লুটপাট এসোসিয়েশন” নামে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে চলমান কমিটি অচল অথর্ব দাবী করে তারা বলেন, কথিত ৪ নেতার লুটপাটের কারণেই আজ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে সংগঠনটি। এতে করে বন্দরের চলমান কাজে স্থবির এবং এসোসিয়েশন চরম ক্রাšি—কাল অতিক্রম করছে। এসোসিয়েশনের দায়িত্বশীল পদে থাকা এক নেতা জানান, লুটপাটকারি ৪ জনের কারণে আমরা কখন ঝামেলায় ফেসে যাই এমন আশংকায় বর্তমান কমিটি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
এদিকে অন্যান্য সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে ভোমরার মেসার্স ফরহাদ ইন্টারন্যাশনাল এর ¯^ত্তাধিকারী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলামের বির“দ্ধে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে লাইসেন্স গ্রহণ করায় তা বাতিলের দাবী জানিয়ে চেয়ারম্যান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ , কাষ্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, খুলনা বরাবর কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তৎকালিন সময়ে লাইসেন্স আবেদনকারির শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে এসএসসি পাশ চাওয়া হলে মেসার্স ফরহাদ ইন্টারন্যাশনাল এর মালিক অহিদুল ইসলাম প্রকৃত পক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাশ। তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে এসএসসি’র সার্টিফিকেট মাজাঘষা করে এসএসসি পাশ দেখিয়ে দাখিল করে সিএন্ডএফ’র লাইসেন্স গ্রহণ করেন। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, (আবেদনকারি) আমরা এলাকার মানুষ হিসেবে তাকে দীর্ঘদিন চিনি ও জানি। সে এসএসসি পাশ নয়। যে স্কুলের সার্টিফিকেট দাখিল করা হয়েছে তা নির্ভরযোগ্য কোন কর্মকর্তা দিয়ে সরেজমিনে তদš— করলে এবং উক্ত স্কুলে যোগাযোগ করা হলে জালিয়াতি ফাঁস হয়ে পড়বে। এছাড়াও উক্ত লাইসেন্সটির নথি পর্যালোচনা করলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অপরাধে একাধিকবার সাময়িক স্থগীত করা হয়। এধরণের ব্যবসায়ীর কারণে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের উপর বির“প প্রভাব পড়বে। আবেদনকারিরা তদন্ত সাপেক্ষে লাইসেন্সটি সাময়িক স্থগীতের জন্য অনুরোধ করেন। আবেদনে কয়েকজন ব্যবসায়ীর স্বাক্ষর রয়েছে।
সংশিষ্ট সূত্র আরও জানায়, চলতি বছরের গত ২৩ জানুয়ারী দৈনিক পত্রদূত ও যুগের বার্তা পত্রিকায় ভোমরা সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের কম্পিউটার বিভাগে একজন দক্ষকম্পিউটার ম্যান নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে সাতক্ষীরা সদরের আলিপুর থেকে ২ জন, শহরের পলাশপোল এলাকা থেকে ১ জন ও পদ্মশাখরা থেকে ১ জন করে মোট ৪ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তাদেরকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য গত ১৩ এপ্রিল সিএন্ডএফ এ/ভো/১এন-১(১-৬) নং স্মারকে একটি করে পত্র দিয়ে ২০ এপ্রিল পরীক্ষায় হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। যথারিতি নির্ধারিত দিনে ৪ জন প্রার্থী এসোসিয়েশন বোর্ডে হাজির হয়ে পরীক্ষা দেন। অভিযোগ রয়েছে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারি ৪ জনের কাউকে নিয়োগ না দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ডে হাজির না হওয়া যশোরের জনৈক ব্যক্তিকে উক্ত পদে চাকুরি দেয়া হয়েছে। সংশিষ্ট একাধিক প্রার্থী এবং এসোসিয়েশনের একাধিক নেতারা জানান, যশোরের উক্ত ব্যক্তিকে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কম্পিউটার বিভাগে চাকুরি দিতে একজন সাবেক চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মোটা অংকের লেনদেন করা হয়েছে।
জানাগেছে, বন্দরের ৪ নিয়ন্ত্রকের অনিয়ম দূর্ণীতি ¯^জনপ্রীতি ¯ে^চ্ছাচারিতা আর এসোসিয়েশনের লাখ লাখ টাকা আলোচনা ও সিদ্ধাš— ছাড়াই ইচ্ছামত খরজের নামে লুটপাটকে ঘিরে স¤প্রতিক সময়ে উত্তেজনা লেগেই আছে। আজ শনিবার বেলা ১১ টায় এসোসিয়েশনের মাসিক সভা অনুষ্টিত হবে। এতে ৪ নিয়ন্ত্রকের সার্বিক অনিয়মের কথা তুলে ধরে প্রতিকার দাবী করবেন তারা। দাবী অনুযায়ী প্রতিকার না হলে তারা নিজেরাই এসোসিয়েশনের ¯^ ¯^ পদ থেকে সরে দাড়াবেন বলে রাতে কায়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।
কাজী নাসির উদ্দীন সাতক্ষীরা