গাইবান্ধার ৪টি উপজেলায় স্থগিত ভোট কেন্দ্র নিয়ে সংখ্যালঘুর জনমনে শঙ্কা/ রাত জেগে পাহাড়া দিয়ে আত্মরক্ষার প্রচেষ্টা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি:গাইবান্ধার ৩টি সংসদীয় আসনের ২০৬টি স্থগিত ভোট কেন্দ্রে পুন: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন উত্তর ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এবং জামায়াত-শিবিরের হুমকির মূখে গাইবান্ধার সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাসহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে লোকজন রাত জেগে পালাক্রমে পাহাড়া দিয়ে নিজেদের আত্মরক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ গাইবান্ধা জেলা শাখা প্রদত্ত এক বিবরণীতে জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ি, সাদুল্যাপুর, গোবিন্দগঞ্জ ও সদর উপজেলায় নির্বাচন উত্তর এবং নির্বাচন পরবর্তী ২৮টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাকৈ কাশদহ গ্রামের সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ নিহত হন। এছাড়া ৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ১১টি বসতবাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ২টি হিন্দু পরিবারের মটর সাইকেল আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ভস্মিভুত করা হয়েছে ৫টি বসতবাড়ির গবাদি পশুর জন্য সঞ্চিত খড়ের পালা। এছাড়া ২টি পরিবারের বসতবাড়িতে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতংক সৃষ্টি করা হয়েছে।
তদুপরি সুন্দরগঞ্জের শান্তিরাম, শোভাগঞ্জ, বেলকা, বামনডাঙ্গা, ধর্মপুর ও ছাপড়হাটি ইউনিয়ন, সাদুল্যাপুরের ইদিলপুর ইউনিয়ন গোবিন্দগঞ্জের দরব, তালুককানুপুর, হরিরামপুর ইউনিয়ন এবং নাকাইয়ের রথেরবাজার, রাখালবুর“জ ইউনিয়নের নুনতলা ও ধর্মপুর গ্রামের সংখ্যালঘুদের উপর এখনও স্থগিত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হুমকি অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচনে সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গাইবান্ধা সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা কান্তিভূষণ বর্মন, সুন্দরগঞ্জের রামজীবন ইউনিয়নের কাকৈ কাশদহ গ্রামের মুকুল চন্দ্র বর্মণ জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারদের হামলায় গুর“তর আহত হয়ে এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিশেষ করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের ক্ষত্রিয়পাড়া এলাকার শতাধিক পরিবার জামায়াত-শিবির ক্যাডারদের অব্যাহত হামলার মুখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভয়ভীতি কাটিয়ে নিজেরাই প্রতিরোধ গড়ে তুলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, ওই এলাকার আতংকিত মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা, বল¬ম নিয়ে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে এবং টচলাইট হাতে করে তাদের গ্রামকে রক্ষা করার জন্য রাতভর পাহাড়া দিচ্ছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ওই গ্রাম সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী ঝিনিয়া গ্রাম থেকে বেশ কয়েকটি হুমকির মুখে ভীত সন্ত্র¯— পরিবার নিরাপত্তার কারণে ক্ষত্রিয়পাড়া গ্রামে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।