আন্তর্জাতিক ডেস্ক :- সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে তিনজন ফাঁসির আসামির সাজা রদ করার শুনানি শুরু হয়৷ রায়ে বলা হয়েছিল ফাঁসির আদেশ দীর্ঘদিন কার্যকর করা না হলে তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বদলে যাবে৷ গত ২১শে জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এক বেঞ্চ এই মর্মে রায় দেয় যে, ফাঁসির সাজা যথা সময়ে কার্যকর না করে দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখলে তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বদলানো যাবে৷ এই ঐতিহাসিক রায়ের প্রেক্ষিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের তিন আসামি তাদের ফাঁসির আদেশ রদ করার আবেদন জানালে সুপ্রিম কোর্টে তার শুনানি শুরু হয়৷ আসামিপক্ষের আর্জি, ফাঁসির আদেশ দীর্ঘ ১১ বছর কার্যকর না করার পর কেন তাদের ফাঁসির আদেশ যাবজ্জীবন করা হবে না? রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত ঐ তিনজন আসামির নাম সন্থান, মুরুগান ও পেরারিভালন৷ চতুর্থ আসামি নলিনীর ফাঁসির আদেশ রদ করে তাঁকে আগেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ ঐ তিনজনের ফাঁসির আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন দু’বার খারিজ করে দেন পূর্বতন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা দেবী সিং পাটিল৷ এইভাবে পেরিয়ে গেছে ১১ বছরেরও বেশি সময়৷ কিন্তু ফাঁসি কার্যকর হয়নি৷শুনানির তারিখ পিছিয়ে দিতে সরকারি আইনজীবী শীর্ষ আদালতে আর্জি পেশ করলে তা নাকচ হয়ে যায়৷ আসামি পক্ষের বর্ষিয়ান আইনজীবী রাম জেঠমালানি শুনানির তারিখ পিছিয়ে দেবার আর্জির বিরোধিতা করেন৷ তিনি মনে করেন, ফাঁসির আদেশ দীর্ঘদিন কার্যকর করা না হলে তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বদলে যাবার যে রায় দেন শীর্ষ আদালত তা চ্যালেঞ্জ করতে সরকার রিভিউ বা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবার জন্য তৈরি হচ্ছে৷ সরকার তার রিভিউ পিটিশনে ফাঁসির আসামিদের দু’ভাগে ভাগ করার যুক্তি খাড়া করবে৷ সরকার মনে করেন, ফৌজদারি অপরাধে ফাঁসির সাজা আর যারা সন্ত্রাস বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো অপরাধে ফাঁসির সাজা এক বন্ধনিতে ফেলা যায় না৷ সন্ত্রাস বা বিছিন্নতাবাদীদের প্রাণভিক্ষার আবেদন যদি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে তাহলে তাঁদের প্রাণদণ্ডকে যাবজ্জীবনে বদলানো যেতে পারে না৷ সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু এই যুক্তি মানতে নারাজ৷ ফাঁসির আসামিদের অপরাধের মাত্রাভেদে তারতম্য করা যায় না বলেছে সুপ্রিম কোর্ট৷ভারতের দক্ষিণী রাজ্য তামিলনাড়ুর শ্রীপেরাম্বুদুরে ১৯৯১ সালের ২১শে মে এক নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে সন্ত্রাসী বিস্ফোরণকাণ্ডে প্রাণ হারান রাহুল গান্ধীর পিতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী৷ ঐ বিস্ফোরণে রাজীব গান্ধীর সঙ্গে নিহত হন আরো ১৪ জন৷ আত্মঘাতি সন্ত্রাসী বিস্ফোরণের মূল অপরাধি ধানু নামে শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল লিবারেশন টাইগার এলটিটির সদস্যা৷ গাড়ি থেকে নেমে রাজীব গান্ধী যখন সভামঞ্চের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন কংগ্রেস সমর্থকদের ভিড়ের মধ্যে মিশে রাজীব গান্ধীকে মালা দেবার নামে তাঁর পা ছুঁতে গিয়ে কোমরে বাঁধা আরডিএক্স বেল্টে বিস্ফোরণ ঘটায়৷ এলটিটি-এর প্রধান প্রভাকরণ রাজীব গান্ধীকে শত্রু মনে করতো৷ কারণ তার আগে টাইগার বাহিনীকে নিরস্ত্র করতে শান্তি সেনা পাঠিয়ে ছিলেন রাজীব গান্ধী৷ আবার ক্ষমতায় এলে আবারও তা করবেন বলে জানিয়েছিলেন৷ তখন থেকেই এলটিটিই প্রধান প্রভাকরণ রাজীব গান্ধীকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র শুরু করে৷ সূত্র- DW.DE,
.