জি নিউজ বিডি ডট নেট ডেস্ক :- গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের এক শহরতলী কিফিসিয়া৷ মারিয়া কেফালা সালমাতানি অভাবিদের খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধ বিলি করেন সেখানে৷ ২০০৩ সালে সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত হন তিনি৷ প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরদের জন্য একটি আশ্রম গড়বেন ভেবেছিলেন৷ কিন্তু… গ্রিসে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসনকে অন্য বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে হয়৷ তাই মারিয়া সালমাতানিকে এখন দুঃস্থদের দেখাশোনা করতে হচ্ছে৷দানের অর্থে চলছে প্রকল্পটি–প্রাথমিক পর্যায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রকল্পটি দাঁড়িয়ে যায়৷ ৪০,০০০০০ ইউরো পাওয়া যায় তখন৷ এখন ব্যক্তিগত দানের অর্থে চলছে এই সাহায্য কর্মসূচিটি৷ ‘‘আমাদের এলাকা ১৯৮০ সাল থেকে বিশিষ্ট জনদের বসতি বলে পরিচিত৷ কিন্তু এতে শুধু একটা দিকের চিত্রই পাওয়া যায়৷ কিফিসিয়ায় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারও বসবাস করেন, যাদের এখন বেকারত্বের কবলে পড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে”, বলেন ৬২ বছর বয়স্ক মারিয়া সালমাতানি ৷ এমন বহু পরিবার রয়েছে, যেখানে মা-বাবা দুজনেই উপার্জন করতেন৷ এখন দুজনেই চাকরিচ্যুত৷ এমনকি অর্থনৈতিক সংকটের কবলে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিকও৷ প্রয়োজনীয় খাবার কেনার সামর্থ্যও নেই তাঁদের৷মারিয়া কেফালা-সালমাতানি বলেন, অনেকেই নিজের অভাবটা বাইরে প্রকাশ করতে চান না, আত্মসম্মানে বাধে৷ নগর প্রশাসনের ১৯ জন কর্মী দৈনিক খাদ্যদ্রব্য বিতরণে কাজ করছেন৷ তাঁদের সাথে যোগ দিয়েছেন একটি সাহায্য প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা৷অনেকেই নাম লিখিয়েছেন–কিফিসিয়ায় ১৭০ জন খাদ্যসাহায্য পাওয়ার জন্য তালিকায় নাম লিখিয়েছেন৷ কিন্তু অভাবগ্রস্তদের সংখ্যাটা আরো বেশি হবে৷ অনেকেই নিজের অভাবটা বাইরে প্রকাশ করতে চান না৷ আত্মসম্মানে বাধে৷ বলেন মারিয়া কেফালা-সালমাতানি৷ ‘‘প্রায়ই আমরা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আভাসে ইঙ্গিতে জানতে পারি এই সব মানুষের অভাবের কথা৷ যেমন তাঁদের বাসায় লাইট জ্বলতে দেখা না গেলে৷ এতে অনুমান করা যায় হয়তো বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে”, বলেন কাউন্সিলর মারিয়া৷ এক্ষেত্রে মনস্তত্ত্ববিদ ও সমাজকর্মীরা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সাহায্য করতে চেষ্টা করেন৷ অবশ্যই যতটা সম্ভব লোকচক্ষুর আড়ালে৷নয়ডর্ফের স্যুপ–বিশ্বের কত দেশে কত কিছুরই না মিউজিয়াম রয়েছে৷ তাই বলে স্যুপ-এর মিউজিয়াম? কেনই বা নয়? এ দেশে স্যুপ বেশ জনপ্রিয় খাবার যে! হ্যাঁ, জার্মানির ছোট্ট একটি গ্রামে পর্যটক সংগঠকের উদ্যোগে ২০০০ সালে তৈরি করা হয়েছে এই স্যুপ মিউজিয়াম৷ স্যুপ খাওয়ার নানা সরঞ্জাম, স্যুপের ইতিহাস এবং রেসিপি নিয়ে গঠিত হয় এই মিউজিয়াম৷
জার্মানিতে স্যুপ মিউজিয়াম
মিউজিয়ামের দেয়াল
মিউজিয়ামে দেয়ালে লেখা আছে স্যুপ নিয়ে নানা প্রবাদ বাক্য, নানা ছবি ও সেগুলোর বর্ণনা৷ আর তার সাথে স্যুপের রকমারি গল্প ইত্যাদি৷
- ·
জার্মানিতে স্যুপ মিউজিয়াম
নামের উৎপত্তি
কয়েক শত বছর আগে একজন পথিক ঘুরতে ঘুরতে নয়ডর্ফ গ্রামে গিয়েছিলেন এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার চেয়েছিলেন৷ মজার ব্যাপার যে, প্রতিটি বাড়িতেই তাঁকে নাকি শুধু স্যুপ খেতে দিয়ে বিদায় দেয়া হয়েছিল৷ তাই সেই পথিক জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার পথে বলছিলেন, ‘‘বিদায় স্যুপের রাজ্য, টা টা’’৷ এমনটাই প্রবাদ রয়েছে যে, এরপর থেকেই ‘নয়ডর্ফ’ গ্রামের নাম হয়ে গেছে স্যুপের গ্রাম বা স্যুপের দেশ৷
- ·
জার্মানিতে স্যুপ মিউজিয়াম
স্যুপের দেশ
এই অঞ্চলের বিশেষ স্যুপের রেসিপি, রান্না করার সাজানো কিচেন এটি৷ গ্রামটি ‘নয়ডর্ফ’ নামের চেয়েও ‘স্যুপেন লান্ড’ বা ‘স্যুপের দেশ’ নামে বেশি পরিচিত৷ এখন গ্রামের সব মানুষই ‘স্যুপেন লান্ড’ বলে নিজের গ্রামকে পরিচয় দিয়ে থাকেন এবং এ নামেই নয়ডর্ফকে এখন বেশি মানুষ চেনে৷
- ·
জার্মানিতে স্যুপ মিউজিয়াম
তাজা উপকরণ
এই মিউজিয়ামটি তৈরিতে সাধারণ মানুষেরও অনেক অবদান রয়েছে – একথা বলেন স্টেফি রিশ্টার, যিনি মিউজিয়ামটির দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন৷ প্যাকেটের স্যুপ হচ্ছে অলস মহিলাদের জন্য৷ অবশ্য তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চেষ্টা করি তাজা উপকরণ দিয়ে ঘরে তৈরি করা স্যুপের বিভিন্ন রেসিপি সংগ্রহ করে রাখার জন্য৷’’
- ·
জার্মানিতে স্যুপ মিউজিয়াম
স্যুপে থাকে পুষ্টিগুণ
নয়ডর্ফের স্যুপ মিুজিয়াম সম্পর্কে বনের স্যুপ ইন্টটিউটের মুখপাত্র ডির্ক রাডেরমাখার-এর মন্তব্য, ‘‘স্যুপ বিশ্বের অনেক জায়গাতেই একটি পরিচিত খাবার৷ তবে জার্মানির স্যুপের আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷’’ এছাড়া স্যুপ শুধু খেতেই সেরা নয়, স্যুপে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টিগুণ৷
- ·
জার্মানিতে স্যুপ মিউজিয়াম
স্যুপ প্রতিযোগিতা
১৯৯২ সাল থেকে প্রতিবছরই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে৷ বিভিন্ন এলাকার ভালো স্যুপ রাধুনীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন৷ সবচেয়ে ভালো স্যুপ রাধুনী বিজয়ীকে দেওয়া হয় স্যুপ খাওয়ার থালা-বাসন৷ গত বছর স্যুপ প্রতিযোগিতায় স্থান পেয়েছিলো ২৪ রকমের স্যুপ৷
প্রতিবেদন: নুরুননাহার সাত্তার | সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
অভিজাত এলাকাও বাদ যায়নি–এথেন্সের উত্তরে অভিজাত এলাকা ফিচিকনে এ ব্যাপারে বিশেষ গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়৷ এখানকার অনেকে কল্পনাই করতে পারেনি যে, এই ধরনের পরিস্থিতিতে একদিন তাঁদের পড়তে হবে৷ সাহায্যপ্রার্থী হওয়াটা তাঁদের কাছে অত্যন্ত লজ্জার বিষয়৷অর্থনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার আগে ঐ এলাকায় বাড়ির মূল্য ছিল আকাশচুম্বী৷ এমন একটি অঞ্চলে অভাবিদের জন্য খাদ্যদ্রব্য বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে, সেটা নগর কর্তৃপক্ষ আগে ভাবতেই পারেননি৷ কিন্তু গত কয়েক বছরে ১২০ জন শহরের এই খাদ্য বিতরণকেন্দ্রে এসেছেন৷ সপ্তাহে একদিন বিরাট এক ভোজ্যপণ্যের সাহায্য প্যাকেট পান ভুক্তভোগীরা৷ ক্রিসমাসের সময় সবাই মিলে উৎসব করার জন্য আলাদাভাবে সাহায্য করা হয়৷ ভুক্তভোগীদের সঠিক সংখ্যাটা নগর কর্তৃপক্ষের জানা নেই৷ কেননা অনেকে আবার গির্জা কর্তৃপক্ষের কাছেও সাহায্যের জন্য যান৷ এক্ষেত্রে ক্যাথলিক গির্জা বেশ সক্রিয়৷ তাদের নিজস্ব খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র রয়েছে৷ সেখানে সাধারণত ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী অভিবাসীদের ভিড়ই দেখা যায়৷ যাদের অন্য কোথাও সাহায্য পাওয়ার আশা নেই৷ সূত্র- DW.DE