অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশালের আগৈলঝাড়াসহ বিভিন্ন উপজেলার বিএনপি-জামায়াতের বিতর্কিত নেতাকর্মীরা নতুন মোড়কে নিজেদের আবিস্কার করার চেষ্টায় আবারো বেপরোয়া হয়ে ওঠার ছক কসছে বলে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে। গোয়েন্দা সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমে দলীয় কোন্দল সৃষ্টির পাশাপাশি আ’লীগ নিধনের লক্ষে ১৮ দলের বিতর্কিত কর্মীরা মাঠে সক্রিয় থাকবেন। সেলক্ষে ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিতর্কিত ওইসব নেতাকর্মীরা তাদের ঝিমিয়ে পরা সমর্থকদের চাঙ্গা করতে গোপন বৈঠকও করেছেন। এছাড়া কতিপয় বিতর্কিত ব্যক্তিরা তাদের ষড়যন্ত্র অনুযায়ি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আনুষ্ঠানিক ভাবে আ’লীগে যোগদান করারও পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন ওই আওয়ামীলীগ নেতাদের হাত ধরেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা জানান, বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরবর্তী সময়কার উপজেলা পরিষদের নির্বাচনেও বিএনপি-জামাতের বিতর্কিত নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে মাঠে সক্রিয় ছিলেন। ভিন্ন দলের ওইসব নেতাকর্মীদের কারণে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কাছে ভিড়তে পারেনি ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে ওইসব সুবিধাভোগীরা নির্বাচিত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নিজ স্বার্থ হাসিল করতেও ভুল করেননি। সরকারী অর্থে ওইসব বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীদের এক বাড়ির জন্য একটি ব্রিজ কিংবা এক বাড়ির জন্য একটি কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যানেরা। স্থানীয় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ বন্টন ও টিআর, কাবিখার কাজেরও সমবন্টন করে দেয়া হয়েছে বিএনপি-জামাত নেতাকর্মীদের। অধিকাংশ কাজ নামেমাত্র-শেষ করে চেয়ারম্যানদের পরোক্ষ মদদে পুরো বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন বিতর্কিত দলের পদ-পদবীধারী নেতারা। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রায় প্রত্যেকটি কাজের কমিশন দিতে হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যানকে। ফলে বিগত পাঁচবছরেই আওয়ামীলীগের প্রকৃত ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীরা দলীয় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
এছাড়াও বিভিন্ন অজুহাতে নেতাকর্মীদের দূরে সরিয়েও রাখা হয়েছে।
এদিকে জাতীয় নির্বাচন বয়কট করলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচন হিসেবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির দলের অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাবের কথা কেন্দ্র থেকেই তৃণমূল পর্যায়ে জানানো হয়েছে বলে দলের বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে পাঁচবছর স্থানীয়ভাবে নিজেদের টিকে থাকার লড়াইয়ে বিএনপি ও জামাত নেতাকর্মীরা দলের প্রার্থীর সাথে থাকার পাশাপাশি দলের বড়
একটি অংশ আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে লোক দেখানো মাঠে থাকবে বলে জানা গেছে।
সূত্র আরো জানিয়েছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব মুহুর্তে বিএনপি-জামায়াতের টানা আন্দোলনে সুবিধাভোগী ১৮দলের ওইসব নেতারাই আ’লীগের পাঁচবছরের উপার্জিত অর্থ দিয়ে আ’লীগ নিধনের আন্দোলনে সক্রিয় হচ্ছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বরিশালের বিভিন্ন উপজেলার ওইসব বিতর্কিত বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেফতার আতঙ্কে অনেকটাই আত্মগোপনে থাকলেও উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা শুনে তারা নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে। এবারও তারা কৌশলে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে সক্রিয় থাকার ঘোষণা দিয়ে সম্ভ্রাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কাছে ছুঁটতে শুর“ করেছেন। তারা আ’লীগে একাধিক প্রার্থী বানানোর প্রানপণ চেষ্টা চালিয়ে যাবেনবলেও জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি গোয়েন্দাসূত্র জানিয়েছেন, ১৮ দলের ওইসব বিতর্কিতরা এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন কৌশলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমে আ’লীগের দলীয় কোন্দল সৃষ্টির পাশাপাশি আ’লীগ নিধন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। সেলক্ষে ইতোমধ্যে কয়েকটি স্থানে বিএনপি’র ওইসব বিতর্কিত নেতাকর্মীদের গোপন বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।