আন্তর্জাতিক ডেস্ক:– সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস) নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নাকি শতাধিক পশ্চিমি মেয়েদের পাওয়া যাবে৷ ধনি-দরিদ্র, সুখি-অসুখি, সব ধর্মের পরিবার থেকে তাদের সংগ্রহ করছে – বহুক্ষেত্রে মহিলা – দালালরা৷ যে ১৭ বছরের মেয়ে তার জন্মের দেশ ফ্রান্সে স্কুলে যেত আর ডিসনি ছবি দেখত, সে হঠাৎ একদিন উধাও হয়ে যাবে এবং তাকে সিরিয়ার আলেপ্পো হয়ে অন্য কোনো অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে; যে দলে সে রয়েছে, সেই দলের ‘আমির’ বা নেতার সঙ্গে তার বিবাহ দেওয়া হবে; এরপর তার ভালো লাগুক আর না লাগুক, পুরনো জীবনে ফিরে যাওয়ার আর তার কোনো পথ বা পন্থা নেই৷
মেয়েটি ফ্রান্সে ফিরতে পারেনি, কেননা তার গোষ্ঠীর ফরাসি-ভাষী নেতা তাকে হত্যা করার ভয় দেখিয়েছিল৷ মেয়েটি আজ তারই বয়সি আরো অনেক ফরাসি মেয়েদের সঙ্গে একসঙ্গে রয়েছে৷ এই সব মেয়েদের অনেককেই মানবিক সাহায্য কিংবা সেবাকার্যের লোভ দেখিয়ে সিরিয়ায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ এখানে আসার পর কোনো যোদ্ধার সঙ্গে জোর করে বিয়ে; শরিয়া অনুযায়ী জীবনযাত্রা, পোশাক-আশাক, আচার-আচরণ; সেই সঙ্গে কড়া নজরদারি৷
দশ শতাংশ মহিলা- ইসলামপন্থিদের হস্তগত এলাকায় যারা জিহাদিদের সঙ্গে যোগ দিতে যায়, তাদের প্রায় দশ শতাংশ মহিলা৷ এই সব তরুণী, কিশোরীদের বিবাহ করার জন্য পুরুষ যোদ্ধারা উৎসুক৷ টিনেজ পশ্চিমি মেয়েদের মন কাড়ার জন্য প্রাপ্তবয়স্কা মহিলা দালালরা আছে, যারা ইউরোপে থেকে, সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিফোনের মাধ্যমে এবং বন্ধুত্বের ভান করে মেয়েগুলির সঙ্গে আলাপ করে৷ এই দালালরাই মেয়েগুলিকে সিরিয়া বা ইরাকে মানবিক সাহায্য, সেবাকার্য ইত্যাদি কাজের কথা বলে, তাদের সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করে৷ অন্যরা ততদিনে জিহাদি মতাদর্শ মেনে নিয়েছে৷ মেয়েদের সাধারণত যুদ্ধ করতে হয় না৷ তা সত্ত্বেও, রণাঙ্গণের কাছে তাদের বাসের ব্যবস্থা করায় তারা বিমান হানার শিকার হতে পারে৷
মজার কথা, যে সব ইউরোপীয় মেয়েরা এই ‘ব়্যাডিকালাইজেশন’-এর শিকার হচ্ছে, তাদের একটা বড় অংশ কিন্তু এসেছে মধ্যমপন্থি মুসলিম পরিবার থেকে৷ অপরদিকে নাস্তিক, ক্যাথলিক, ইহুদি, ধনি-দরিদ্র, শহুরে অথবা গ্রামাঞ্চলের পরিবার, সব ধরনের পটভূমি থেকেই মেয়েদের জিহাদে যোগদানের খবর পাওয়া গিয়েছে৷ জিহাদি প্রোপাগান্ডার ফলে ‘প্রেমে পড়ে’ যোগদান, খোদ জিহাদের রোমাঞ্চ, সব কিছুই এই মেয়ে জিহাদিদের সিরিয়া যাত্রার জন্য দায়ী৷ জার্মানিতে যেমন সালাফিদের এখন খুব ভালো বাজার চলেছে৷
জার্মানি থেকে যে ৪০০ জিহাদি সিরিয়া যাত্রা করেছে, তাদের মধ্যে প্রায় দশ শতাংশ মহিলা৷ ফ্রান্স থেকে গেছে হাজার খানেক জিহাদি, যাদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ৬০, বলে সরকারি পরিসংখ্যানে প্রকাশ৷ সেভাবেই: সুইডেন থেকে যে ৮৫ জন জিহাদি গেছে, তাদের মধ্যে ১৫-২০ জন মেয়ে৷খবর:ডিডাব্লিউ, তাদের সবাই নাকি হবু ‘শহিদদের’ বিবাহ করতে চায়৷ বেহেস্ত নিয়েই তারা ব্যাকুল, তাই নিয়েই তাদের মরণবিলাস৷
ইসলামি জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে,পশ্চিমি মেয়েরা
Share This