চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক মামলা সংক্রান্ত— ব্যাপারে একজন আসামীকে মিথ্যা মেডিকেল সনদ প্রদানের বিরুদ্ধে একটি তদš— কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ ক্রেতা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন ফাউন্ডেশন এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান আলমগীর নূরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত ওই তদন্ত কমিটির বৃহস্পতিবার চমেক’র সভা কক্ষে এক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. এ.এম.এন ফকরুজ্জাহান এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তদন্ত— কমিটির প্রদান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (অর্থপেডিক সার্জারী) ডা. মো. সমীরুল আলম। এসময় তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য চমেক’র আর/এস (জেনারেল সার্জারী ) ডা. আহসানুল আবেদীন ও চমেকের চিকিৎসক ডা. এ.কে এম আকরামুল বারী উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ার জের ধরে পূর্ব বাকলিয়াস্থ কালামিয়া বাজার এলাকায় নুর মোহাম্মদ সওদাগরের বাড়ীর সম্মূখ সড়কে গত বছরের ৯ অক্টোবর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা মানবাধিকার সংগঠক আলমগীর নুর ও তার পরিবারের সদস্যদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে ব্যাপকভাবে জখম করে। পরবর্তীতে আলমগীর নূরসহ পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা নেয়ার পর বাকলিয়া থানায় একটি মামলা (নং– ১২(১০)/১৩) দায়ের করে। মামলাটি দায়েরের পর প্রধান আসামী সালাউদ্দিন মামলা থেকে রেহাই পেতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডা. এ.এম.এন ফকরুজ্জাহান থেকে ‘গ্রিভিয়র্স সার্টিফিকেট’ গ্রহণ করে। যাতে আঘাতের বিষয়টা ছিল সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এ ব্যাপারে সংগঠক আলমগীর নূর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এর সার্টিফিকেট প্রদানকারী সংশিষ্ট বিভাগকে ডা. এ.এম.এন ফকরুজ্জাহান এর ভূয়া চিকিৎসা সনদ সম্পর্কে অবহিত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একই সাথে গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পরিচালক বরাবরেও লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে আলমগীর নূর ডা. এ.এম.এন ফকরুজ্জাহান এর সার্টিফিকেট প্রদানে ইচ্ছাকৃত অনৈতিক সহযোগিতা রয়েছে বলে ধারনা পোষণ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ডা. মো. সমীরুল আলমকে প্রদান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত— কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, চমেক’র আর/এস (জেনারেল সার্জারী ) ডা. আহসানুল আবেদীন ও চমেকের চিকিৎসক ডা. এ.কে এম আকরামুল বারী । কমিটি গঠনের পর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এই বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে সংগঠক আলমগীর নূরও উপস্থিত থেকে নিজ বক্তব্যে উপস্থাপন করেন। এ সময় কমিটির সদস্যরা অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। একই সাথে ওই ভূয়া সনদ বাতিলের সুপারিশমালা প্রণয়নে সর্বাত্বক চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
জানা গেছে, কালামিয়া বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলে এক শ্রেনীর মাদকব্যবসায়ীরা। মাদক ব্যবসার কারণে এলাকার তরুণ সমাজ ধংসের পথে পা বাড়াচ্ছে বলে মানবাধিকার সংগঠক আলমগীর নূরসহ স্থানীয় লোকজন এতে বাধা দিচ্ছিলেন। এর জের ধরে গত গত বছেরর ৯ অক্টোবর সকাল ১১টায় মাদক সিন্ডিকেটের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে আলমগীর নূর, তার ভাই জাহাঙ্গীর আলমসহ মাদক ব্যবসায়ী বাধাদানকারীদের উপর হামলা চালালে কমপক্ষে ৭জন আহত হয়। মাদক ব্যবসায়ীরা প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার জন্য এবং অপরাধ থেকে রেহাই পেতে কতিপয় ডাক্তারের সহযোগিতায় অনৈতিক উপায়ে বিভিন্ন মিথ্যা গ্রিভিয়াস চিকিৎসা সনদ গ্রহণ করে আসছে। একই সাথে নানা রকম মিথ্যা মামলা দায়ের করে মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে অবস্থানকারী সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে রীতিমত হয়রানী করে চলেছে মর্মে অভিযোগ করেন মানবাধীকার সংগঠক আলমগীর নুর।