দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশ পেরুতে নারী নির্যাতনের হার খুবই বেশি৷(প্রতীকী ছবি)
অনলাইন ডেস্ক:- একটি গ্রন্থ৷ নাম ‘আমার জন্য মরো না‘ (ডোন্ট ডাই ফর মি)৷ সেখানে রয়েছে ২৫টি চিঠি, ই–মেইল ও টেক্সট মেসেজ। যেখানে কোনো মেয়েকে প্রহার করে সুন্দর সুন্দর কথায় ক্ষমা চেয়েছে তার ভালোবাসার মানুষ৷ প্রত্যেককেই বিশ্বাসের চরম মূল্য দিতে হয়েছে!
ব়্যাকুয়েলসকে পিটিয়ে আহত করেছিল তার প্রেমিক৷ যন্ত্রণায় যখন কাতরাচ্ছেন, তখনই প্রেমিকের কাছ থেকে একটা চিঠি এলো৷ চিঠিতে লেখা, ‘‘কথা দিচ্ছি, এমনটি আর হবে না৷ তুমি আমার জীবনের সব৷ ক্ষমা করো৷” বিশ্বাস করে প্রেমিককে ঘরে ফিরিয়েছিলেন ব়্যাকুয়েলস৷
ফেরার পাঁচ সপ্তাহের মধ্যেই আবার বেদম পিটুনি৷ সেই পিটুনিতেই মারা যান ব়্যাকুয়েলস৷
পেরুর পঁচিশজন নারীর জীবনের এমন গল্পই তুলে ধরা হয়েছে ‘ডোন্ট ডাই ফর মি‘, অর্থাৎ ‘আমার জন্য মরো না‘ গ্রন্থে৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশ পেরুতে নারী নির্যাতনের হার খুবই বেশি৷ গত ছয় বছরে সরকারি হিসেবেই সে দেশে ৬৮০ জন নারী তাদের জীবনসঙ্গীর প্রহারে মৃত্যু
বরণ করেছেন৷
‘আমার জন্য মরো না‘-গ্রন্থে যাদের কথা এসেছে তাদের সবাই অবশ্য মারা যাননি৷ কেউ ব়্যাকুয়েলসের মতো মরেছেন, কেউ হয়তো জীবনের অনেক স্বপ্নের অপমৃত্যুকে মেনে নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে ভারবাহীর মতো বয়ে চলেছেন নিজের জীবন৷
প্রথমবার বেদম প্রহারের পর ভিক্টরও তার সঙ্গিনী কার্লাকে লিখেছিলেন, ‘‘অন্য কারো জন্য তুমি কী করে আমাকে ছেড়ে যেতে পারো– এ কথা ভেবে আমি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম৷ ভুল হয়ে গেছে৷ আর কোনোদিন এমন হবেনা৷” দু‘জনের মধ্যে আবার সমঝোতা হলো৷ একসঙ্গে বসবাস করতে লাগলেন ভিক্টর–কার্লা৷ এক বছর পর অন্তঃসত্ত্বা হলেন কার্লা৷ তারপর আবার পিটুনি৷ সেই
পিটুনিতে গর্ভপাত৷ কার্লা এই জীবনে আর কোনোদিন মা হতে পারবেন না।
‘আমার জন্য মরো না‘ গ্রন্থটি দুটো ভাগ৷ প্রথম ভাগে সাদা কাগজের ওপরে ছাপা হয়েছে প্রহারের পর হতভাগ্য কোনো মেয়েকে লেখা প্রেমিকের চিঠি, ই–মেইল বা টেক্সট মেসেজের অনুরূপ৷ দ্বিতীয় অংশে উঠে এসেছে সঙ্গীকে আবার বিশ্বাস করার পর জীবনে নেমে আসা বিপর্যয়ের কথা৷ সেই পর্ব লেখা হয়েছে সাদা অক্ষরে, কালো কাগজে৷সূত্র : ডয়চে ভেল