স্পোর্টস ডেস্ক:- তামিম ইকবালের টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এবং মুশফিকুর রহিমের চমৎকার হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে সাত উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল টাইগাররা। আগামী বুধবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিততে পারলে পাকিস্তানকে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করার উচ্ছ্বাসে ভেসে যাবে বাংলাদেশ। রোববার মিরপুর স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ছয় উইকেটে ২৩৯ রান করে পাকিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতে ৩৬ রান যোগ করেন সরফরাজ আহমেদ ও আজহার আলী। অষ্টম ওভারে বোলিং করতে এসেই আঘাত হেনেছেন রুবেল হোসেন। প্রথম বলেই সরফরাজ আহমেদকে আউট করেছেন এই আলোচিত পেসার। স্লিপে ক্যাচটা দারুণভাবে তালুবন্দী করেছেন সৌম্য সরকার। পরের ওভারে মোহাম্মদ হাফিজকে বোল্ড করেছেন আরাফাত সানি। শূন্য রানে ফিরতে হয়েছে পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে। ১৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে মুশফিকের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন আজহার। পাকিস্তানের অধিনায়কের অবদান ৩৬ রান।
পরের ওভারেই ফাওয়াদ আলম বোল্ড হয়ে গেছেন নাসির হোসেনের বলে। ২২তম ওভারে আবার পাকিস্তানকে ধাক্কা দেন সাকিব। এবার বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার এলবিডব্লিউ করেন মোহাম্মদ ফাওয়াদকে। ৭৭ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া অতিথিদের উদ্ধার করার কৃতিত্ব সাদ নাসিম আর ওয়াহাব রিয়াজের। নাসিম ৭৭ আর ওয়াহাব অপরাজিত ছিলেন ৫১ রানে।
ষষ্ঠ উইকেটে ৭৭ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন হারিস সোহেল ও সাদ নাসিম। কিন্তু ৩৯তম ওভারে সোহেলকে আউট করে পাকিস্তানকে আবার অস্বস্তিতে ফেলে দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে সপ্তম উইকেটে ৬৬ বলে ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে পাকিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছেন নাসিম ও ওয়াহাব রিয়াজ।
৫১ রানে ২ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব। দুই ওভার মেডেন নেয়া রুবেল ৭ ওভার বল করে ২৭ দিয়ে নেন এক উইকেট।
২৪০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে ঝড়ো সূচনা এনে দেয়ার কৃতিত্ব সৌম্য সরকারের। জুনায়েদ খানের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে টানা তিনটি চার মেরে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি উত্তাল করে তুলেছেন তিনি। কিন্তু সেই ওভারের পঞ্চম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। ১১ বলে সৌম্যর সংগ্রহ ১৭ রান। এরপর ১৫তম ওভারে সাঈদ আজমলের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। বিশ্বকাপে দুটো সেঞ্চুরি করা মাহমুদউল্লাহর অবদানও ১৭ রান। তবে তৃতীয় উইকেটে তামিম-মুশফিকের ১১৮ রানের জুটি সহজ জয়ের পথে এগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। ওয়াহাবের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার হাকিয়ে অর্ধশতকে পৌছান আগের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মুশফিক। প্রথম ১১ বলে কোনো রান নিতে পারেননি মুশফিক, এই সময়ে ফ্রি হিটও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
তবে থিতু হওয়ার দ্রুত রান তোলেন আগের ম্যাচে শতক করা মুশফিক। ৬৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলে তিনি ফেরার সময় দল ছিল জয়ের দ্বারপ্রান্তে। তার ৭০ বলের ইনিংসটি গড়া ৮টি চার ও ১টি ছক্কায়।
তামিমের দ্বিতীয় অর্ধশতকটি আসে ৭৭ বলে। সব মিলিয়ে ১০৮ বলে নিজের ষষ্ঠ শতকে পৌঁছান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জুনায়েদের বলে গ্লান্স করে নিজের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যাওয়া তামিম অপরাজিত থাকেন ১১৬ রানে। তার ১১৬ বলের ইনিংসটি ১৭টি চার ও একটি ছক্কা সমৃদ্ধ। শাহরিয়ার নাফীস ও মাহমুদউল্লাহর পর বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুই শতক করেন তামিম। এক রান নিয়ে দলকে জয় এনে দেয়া সাকিব আল হাসান অপরাজিত থাকেন ৭ রানে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন তামিম ইকবাল। সতীর্থ মুশফিকুর রহিমের ঝড়ো ইনিংসের কাছে তামিমের ইনিংসটি ঢাকা পড়ে যায়। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে সিরিজ জিতিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার ঠিকই অর্জন করে নিলেন বাঁহাতি বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান তামিম।খবর:রেডিও তেহরান, এদিকে. পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজের টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় করে নেয়ায় বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।