অনলাইন ডেস্ক:- খালেদা জিয়ার ছোট আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুলশান কার্যালয়ে আসায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল শনিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ঘুম ভাঙার পর খালেদা জিয়ার যখন জানতে পারলেন সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন, তখন তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
গুলশান কার্যালয়ের গেটে থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফিরে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এখানে এসেছেন, এটাই বড় কথা। এটা একটা মানবিক বিষয়, রাজনৈতিক বিষয় নয়। দয়া করে কেউ এটিকে রাজনৈতিক রঙে রঞ্জিত করবেন না। প্রধানমন্ত্রী আসবেন বলেছিলেন। আমরা এটা জানার পর তাদের জানিয়েছিলাম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার মতো কোনো অবস্থা তার ছিল না। আমাদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। খালেদা জিয়া স্বাভাবিক হলে প্রধানমন্ত্রীকে আসার আহ্বান করেছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ এসেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে কোনো অসৌজন্যতা দেখানো হয়নি জানিয়ে মারুফ কামাল খান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আসার পর আমাদের সিনিয়র নেতারা যখন জানতে পারলেন তখন তাকে স্বাগত জানানোর জন্য এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে ঘটনা দ্রুত ঘটে গেছে। শেখ হাসিনা যদি আবার আসতে চান তাহলে আমরা তাকে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
এদিকে, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শোক নিয়ে সমবেদনা জানানোর নামে নোংরা রাজনীতি না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শিমুল বিশ্বাস সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
শিমুল বিশ্বাস বলেন, “সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর আমাকে ফোনে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে শোক প্রকাশ করতে চান। আমি তখন বলেছি, ম্যাডাম ঘুমিয়েছেন। ঘুম থেকে উঠলে তার সঙ্গে কথা বলে গতকাল রাতে হোক আর কাল হোক আমি জানাবো। কিন্তু তারপরও প্রধানমন্ত্রীর আসার খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমি দৌড়ে গিয়েছিলাম শোক বই নিয়ে। কিন্তু তার আগেই তিনি চলে যান। অথচ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আমরা গেট খুলিনি। এটা ঠিক নয়।
তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়ার এই শোকে দেশবাসী শোকাহত। তার এই শোককে নিয়ে কেউ যেন কুৎসিত রাজনীতি না করে। প্রধানমন্ত্রী ও তার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা যেন বাংলাদেশের অচলাবস্থা নিয়ে যথাযথ ভূমিকা রাখেন।”
গতকাল রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে যান তিনি। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর তার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, “সব প্রটোকল ভেঙে প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। একজন নেত্রী হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবে, অন্য একজন মা’কে সান্ত্বনা দিতে ছুটে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
এর মধ্যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না। গাড়ি থেকে নেমে কার্যালয়ের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কার্যালয়ের ফটকটি খুলে দেয়া হয়নি। বিএনপির কেউ প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনাও জানাননি। এটি সম্পূর্ণ শিষ্টাচারবিবর্জিত ও অভদ্রোচিত। এসব বক্তব্যের পরে আবারও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন শিমুল বিশ্বাস।