জি নিউজ বিডি ডট নেট- অনলাইন :- বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের টেলিফোনে আড়িপাতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। গোপনে আড়ি পেতে রেকর্ড করা কথাবার্তা ইন্টারনেটেও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে আর এসব ঘটনাকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার চরম লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি আরো বলেছেন, টেলিফোনে আড়িপাতার এসব ঘটনা বন্ধের দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়।
বিবিসি গতকাল শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে। বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক নেতা এবং বিভিন্ন ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনের কথোপকথন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। ব্যক্তিগত এসব আলাপচারিতা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে ফোনে আড়িপাতার মতো অভিযোগে একটি পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে এবং বেশ কয়েকজনকে বিচারের কাঠগড়ায় দঁঁড়াতে হয়েছে। আমেরিকায়ও গোয়েন্দা সংস্থার আড়িপাতার অভিযোগ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। একান্তই ব্যক্তিগত আলাপচারিতা হলেও, সেটির পুরো রেকর্ড ইন্টারনেটে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে দেয়ার বেশ কিছু ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে। ইন্টারনেটে কয়েকটি পেজে ধারাবাহিকভাবে বিরোধী দলের কয়েকজন নেতার কথোপকথন প্রকাশ করা হয়েছে।
একান্তই ব্যক্তিগত আলাপচারিতা এভাবে ইন্টারনেটে প্রকাশের পর বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকার দুজন সাংবাদিকের আলাপচারিতা ইন্টারনেটে প্রকাশ হয়েছে। তাদের একজন সোহরাব হাসান বলছেন, এটি তার জন্যে একপ্রকার নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেছেন, প্রতিদিনই আমরা যেকথা বলি, সেটা যদি এরকম নজরদারির আওতায় থাকে, আমি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছি। আমার বন্ধু, স্বজন, একই পেশায় যারা রয়েছি, তাদের মধ্যেও আমি উদ্বেগ লক্ষ্য করেছি। রাষ্ট্রের কাছেই আমরা জানতে চাইব, কিভাবে এরকম ব্যক্তিগত আলাপচারিতা অনলাইনে দিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকজনের মোবাইলের আড়িপাতার ঘটনার পর রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই এখন তাদের আলাপের ক্ষেত্রে মোবাইল বা টেলিফোন এড়িয়ে চলছেন।
তবে মোবাইল ফোনে আড়িপাতার জন্যে ঠিক কে বা কারা দায়ী তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে বাংলাদেশের কোনো আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে এ জাতীয় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রব খান বলছেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা আছে, এমন ব্যক্তি ছাড়া ধারাবাহিকভাবে মোবাইল আলাপচারিতা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। রেকর্ড করা কল প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেক ধরণের ইন্টারেস্ট কাজ করে। যেমন হয়তো এটা একটা নিউজ হতে পারে, অথবা রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করা যেতে পারে। কল রেকর্ড করা হয় হয়তো একটা উদ্দেশ্যে, কিন্তু সেটি প্রকাশ করা হয় অন্য উদ্দেশ্যে। সম্প্রতি আমেরিকায় আড়িপাতা কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে আব্দুর রব খান বলেন, সাধারণত এ ধরণের অভিযোগের ক্ষেত্রে সবসময় রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেই দায়ী করা হলেও, প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কখনোই তারা দায়িত্ব স্বীকার করে না। তবে যারাই এটি করুক না কেন, গোপনে আড়ি পেতে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা রেকর্ড এবং প্রকাশ করাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, এ ধরণের ঘটনা বন্ধে সরকার বা রাষ্ট্রকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। কারো কথোপকথনে আড়িপাতা অবশ্যই মানবাধিকার এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার লঙ্ঘন। কারণ আদালতের অনুমতি ছাড়া কারও টেলিফোন রেকর্ড করা যায় না, প্রকাশও করা যায় না। এ ধরণের েেত্র পুরো দায়িত্বই কিন্তু রাষ্ট্রের। মিজানুর রহমান বলেন, অনেক সময় মধ্যস্তরের বা নিন্মস্তরের কর্মকর্তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে এরকম টেলিফোন আলাপ রেকর্ড করে প্রকাশ করেন। কিন্তু এ ঘটনা প্রতিরোধে সরকারকেই সজাগ থাকতে হবে। বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন নেতার ধারাবাহিক টেলিফোন আলাপ প্রকাশ হলেও এখনও সরকারি বা ক্ষমতাসীন দলের কোনো নেতাকর্মীর এরকম আলাপচারিতা প্রকাশ হয়নি। তবে বিরোধী কোনো কোনো নেতা দাবি করেছেন, তাদের কণ্ঠ নকল করে ওই অডিও টেপ তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেতার টেলিফোন আলাপচারিতা প্রকাশের পর সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী সেটিকে সমর্থন করেছিলেন। বিরোধী দল তার সমালোচনা করলেও এর বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একজন বিচারকের স্কাইপ আলাপের তথ্য ফাঁসের ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত একমাত্র আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নজির রয়েছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা তাঃ-৪ জানুয়ারি ২০১৪
জি নিউজ বিডি ডট নেট- অনলাইন :- বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের টেলিফোনে আড়িপাতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। গোপনে আড়ি পেতে রেকর্ড করা কথাবার্তা ইন্টারনেটেও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে আর এসব ঘটনাকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার চরম লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি আরো বলেছেন, টেলিফোনে আড়িপাতার এসব ঘটনা বন্ধের দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়।
বিবিসি গতকাল শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে। বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক নেতা এবং বিভিন্ন ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনের কথোপকথন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। ব্যক্তিগত এসব আলাপচারিতা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে ফোনে আড়িপাতার মতো অভিযোগে একটি পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে এবং বেশ কয়েকজনকে বিচারের কাঠগড়ায় দঁঁড়াতে হয়েছে। আমেরিকায়ও গোয়েন্দা সংস্থার আড়িপাতার অভিযোগ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। একান্তই ব্যক্তিগত আলাপচারিতা হলেও, সেটির পুরো রেকর্ড ইন্টারনেটে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে দেয়ার বেশ কিছু ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে। ইন্টারনেটে কয়েকটি পেজে ধারাবাহিকভাবে বিরোধী দলের কয়েকজন নেতার কথোপকথন প্রকাশ করা হয়েছে।
একান্তই ব্যক্তিগত আলাপচারিতা এভাবে ইন্টারনেটে প্রকাশের পর বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকার দুজন সাংবাদিকের আলাপচারিতা ইন্টারনেটে প্রকাশ হয়েছে। তাদের একজন সোহরাব হাসান বলছেন, এটি তার জন্যে একপ্রকার নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেছেন, প্রতিদিনই আমরা যেকথা বলি, সেটা যদি এরকম নজরদারির আওতায় থাকে, আমি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছি। আমার বন্ধু, স্বজন, একই পেশায় যারা রয়েছি, তাদের মধ্যেও আমি উদ্বেগ লক্ষ্য করেছি। রাষ্ট্রের কাছেই আমরা জানতে চাইব, কিভাবে এরকম ব্যক্তিগত আলাপচারিতা অনলাইনে দিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকজনের মোবাইলের আড়িপাতার ঘটনার পর রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই এখন তাদের আলাপের ক্ষেত্রে মোবাইল বা টেলিফোন এড়িয়ে চলছেন।
তবে মোবাইল ফোনে আড়িপাতার জন্যে ঠিক কে বা কারা দায়ী তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে বাংলাদেশের কোনো আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে এ জাতীয় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রব খান বলছেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা আছে, এমন ব্যক্তি ছাড়া ধারাবাহিকভাবে মোবাইল আলাপচারিতা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। রেকর্ড করা কল প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেক ধরণের ইন্টারেস্ট কাজ করে। যেমন হয়তো এটা একটা নিউজ হতে পারে, অথবা রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করা যেতে পারে। কল রেকর্ড করা হয় হয়তো একটা উদ্দেশ্যে, কিন্তু সেটি প্রকাশ করা হয় অন্য উদ্দেশ্যে। সম্প্রতি আমেরিকায় আড়িপাতা কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে আব্দুর রব খান বলেন, সাধারণত এ ধরণের অভিযোগের ক্ষেত্রে সবসময় রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেই দায়ী করা হলেও, প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কখনোই তারা দায়িত্ব স্বীকার করে না। তবে যারাই এটি করুক না কেন, গোপনে আড়ি পেতে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা রেকর্ড এবং প্রকাশ করাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, এ ধরণের ঘটনা বন্ধে সরকার বা রাষ্ট্রকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। কারো কথোপকথনে আড়িপাতা অবশ্যই মানবাধিকার এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার লঙ্ঘন। কারণ আদালতের অনুমতি ছাড়া কারও টেলিফোন রেকর্ড করা যায় না, প্রকাশও করা যায় না। এ ধরণের েেত্র পুরো দায়িত্বই কিন্তু রাষ্ট্রের। মিজানুর রহমান বলেন, অনেক সময় মধ্যস্তরের বা নিন্মস্তরের কর্মকর্তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে এরকম টেলিফোন আলাপ রেকর্ড করে প্রকাশ করেন। কিন্তু এ ঘটনা প্রতিরোধে সরকারকেই সজাগ থাকতে হবে। বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন নেতার ধারাবাহিক টেলিফোন আলাপ প্রকাশ হলেও এখনও সরকারি বা ক্ষমতাসীন দলের কোনো নেতাকর্মীর এরকম আলাপচারিতা প্রকাশ হয়নি। তবে বিরোধী কোনো কোনো নেতা দাবি করেছেন, তাদের কণ্ঠ নকল করে ওই অডিও টেপ তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেতার টেলিফোন আলাপচারিতা প্রকাশের পর সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী সেটিকে সমর্থন করেছিলেন। বিরোধী দল তার সমালোচনা করলেও এর বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একজন বিচারকের স্কাইপ আলাপের তথ্য ফাঁসের ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত একমাত্র আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নজির রয়েছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা তাঃ-৪ জানুয়ারি ২০১৪