অনলাইন ডেস্কঃ- ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কমিশনার আব্দুল কাইয়ুমের নির্দেশেই ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তরের একটি অনুষ্ঠানে টেলিফোনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাড্ডা এলাকার সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার বিএনপি নেতা কাইয়ুমের নির্দেশেই ইতালিয়ান নাগরিক তাভেল্লা সিজারকে হত্যা করা হয়েছে।
৭১ জার্নাল’ নামের ওই অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেছেন, ‘তাভেল্লা সিজার হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে কথিত সেই বড় ভাইয়ের নাম জানা গেছে। মূলত কাইয়ুমের নির্দেশেই তাভেল্লাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে।’ দুই/একদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার বিদেশী হত্যকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ‘ভাগ্নে’ রাসেল, ‘চাকতি’ রাসেল এবং ‘শুটার’ রুবেল সরাসরি ‘কিলিং মিশনে’ অংশ নেয় বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। আর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটিও উদ্ধারের সময় এর মালিক শরীফ নামে আরো একজনকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারের পর ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশে এক ‘বড়ভাই’র নির্দেশে ভাড়াটে খুনিরা তাভেল্লাকে হত্যা করে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে তাভেল্লা তাদের টার্গেট ছিল না, তাদেরকে ভাড়া করা হয়েছিল একজন বিদেশিকে হত্যা করার জন্য।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতেই ইটালিয়ান নাগরিক তাভেল্লা সিজারকে হত্যা করা হয়, হত্যার পেছনে ছিলেন এক ‘বড়ভাই’, প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করতেই আইএস নাটক সাজানো হয়।
তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের জড়িত অভিযোগে চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর খুনের পেছনে রাজনীতিবিদ জড়িত বলে মঙ্গলবার দুপুরেই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়ে দৈনিক যুগান্তরে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যে বড় ভাইদের কথা বলা হচ্ছে সে বড় ভাইদের নাম আজ যুগান্তর পত্রিকায় এসেছে।
দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লা হত্যার জন্য বিএনপি নেতা কাইয়ুমকে ও জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যার জন্য বিএনপি নেতা হাবিবুন্নবী সোহেলকে দায়ী করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “ইতালির নাগরিক তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডে শুধু বড় ভাই আসল নয়, তার পেছনে যারা রয়েছেন, তারা রাজনীতিবিদ। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সংশ্লিষ্টতা (খুনের সঙ্গে) পাওয়া গেছে। তারা গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন। তথ্য প্রমাণ বিচার-বিশ্লেষণ করে দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই তাকফিরি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আইএসআইএল দায় স্বীকার করেছে বলে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ খবর দিলেও শুরু থেকেই তা অস্বীকার করে আসছিল পুলিশ এবং সরকার। সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বিদেশি খুনের জন্য বিএনপি-জামায়াতকে সরাসরি দায়ী করে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মঙ্গলবারই বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলেই সরকার বিএনপিকে দোষারোপ করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করছে