আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ- ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৯৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন বলে সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এনসিআরবি’র রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১২ সালের তুলনায় গত বছর ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১২ সালে ২৪ হাজার ৯২৩ জন মহিলা ধর্ষিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৭০৭ জনে। ধর্ষণের পরিসংখ্যানে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে রাজধানী নয়াদিল্লি। মেডিকেল কলেজ ছাত্রী ‘নির্ভয়া’র ঘটনার পরও নয়াদিল্লিতে ধর্ষণ কমেনি বলে এনসিআরবি দাবি করেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২ সালে দিল্লিতে ৫৮৫ জন মহিলা ধর্ষিত হলেও ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১,১৪১ জনে। দিল্লির পরেই রয়েছে মুম্বাই (৩৯১), জয়পুর (১৯২) ও পুণে শহর (১৭১)। ধর্ষণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোর মধ্যে এগিয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। ২০১৩ সালের হিসাবে ওই রাজ্যে ৪,৩৩৫ জন মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়। এ বছরের এপ্রিলে মধ্যপ্রদেশে চলন্ত একটি বাসের মধ্যে ১৪ বছরের এক দলিত বালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে পাঁচজনের বিরুদ্ধে। জমি বিতর্কের জেরে এ বছরের জুনে এক উপজাতি মহিলাকে গণধর্ষণ করে তার স্বামীসহ ১০ ব্যক্তি। ধর্ষণের পরিসংখ্যানে মধ্যপ্রদেশের পরেই রয়েছে রাজস্থান (৩২৮৩), মহারাষ্ট্র (৩০৬৩, উত্তরপ্রদেশ (৩০৫০) ও তামিলনাড়ু (৯২৩)। এনসিআরবি’ র তথ্য অনুযায়ী, অধিকাংশ ধর্ষণে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন জড়িত। গত ৩০ মে জার্মান রেডিও ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণ বা যৌন নিগ্রহের তালিকায় ভারত বিশ্বের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। কার্যত প্রতি ২২ মিনিটে ভারতের কোথাও না কোথাও একজন সাবালিকা বা নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হচ্ছে। বলা বাহুল্য, এর দায় দেশের পুলিশ ও বিচারব্যবস্থার। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালে দিল্লির একটি বাসে বিবেক মথিত করা গণধর্ষণের ঘটনায় মেডিক্যাল ছাত্রীর মৃত্যুর ক্ষত শুকায়নি। অথচ একই রকমভাবে নিত্যদিন ঘটে চলেছে সাবালিকা বা নাবালিকার ওপর ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা, বারবার। বলতে গেলে প্রতি ২২ মিনিটে ভারতে যৌন নিগ্রহের ঘটনা ঘটছে আর রাজধানী দিল্লিতে ধর্ষণের হার গড়ে দৈনিক চার থেকে পাঁচটি করে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ধর্ষণ-সংক্রান্ত মামলা ঝুলে আছে দেশের বিভিন্ন আদালতে। তার মধ্যে মাত্র ২৬ শতাংশ দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।প্রতিবেদনটি রেডিও তেহরানএর,এই দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার কারণে মহিলাদের বারবার আদালতে হাজিরা দিয়ে ধর্ষণের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিররণ দিতে হয় আসামিপক্ষের কৌঁসুলির জেরায়। তখন অনেক নারী ব্যথা, বেদনা আর হতাশায় আত্মহননকেই মনে করেন শ্রেয়।