তথ্য ডেস্কঃ- একজন হাই তুললে আশেপাশের লোকজনও হাই তুলতে শুরু করে৷ ঠিক সেভাবেই নাকি স্ট্রেস বা মানসিক চাপও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে৷ জার্মানির গবেষকরা হাতেনাতে তার প্রমাণ পেয়েছেন৷ আজকের যুগে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ মোটেই বিরল নয়৷ ঘরে-বাইরে তার কারণেরও অভাব নেই৷ সংসারে অশান্তি, অফিসে বদরাগী বড়সাহেব, স্কুল-কলেজে পড়ার চাপ – তালিকাটা বেশ লম্বা৷ অতএব স্ট্রেস৷ কেউ চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেন, ঝগড়া করেন৷ কেউ বা মুষড়ে পড়েন৷ এর নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যায়৷ আশেপাশের লোকজনও সেটা টের পান৷ চাইলেও তাঁরা উদাসীন থাকতে পারেন না৷আসলে অন্যদের এমন স্ট্রেস-জনিত পরিস্থিতির মধ্যে দেখলে শুধু নিজের মন নয়, শরীরের উপরেও তার ছাপ পড়ে৷ তখন ‘কর্টিসল’ নামের এক হরমোন নিসৃত হয়৷ পরোক্ষ এই প্রতিক্রিয়াকে ‘এমপ্যাথেটিক স্ট্রেস’ বলা হয়৷জার্মানির লাইপসিশ শহরে মাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট-এর এক গবেষক দল এ বিষয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন৷ ড্রেসডেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও এই প্রকল্পে অংশ নিয়েছে৷ এর আওতায় ১৫১ জন মানুষকে জেনেশুনে এমন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলা হয়েছিল, যাতে তাঁদের স্ট্রেস হয়৷ জটিল অঙ্ক থেকে শুরু করে চাকরির ইন্টারভিউ-এর মতো পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁদের৷ দর্শক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল আরও ২১১ জনকে৷ তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আবার পরিচিত, কয়েকজন অপরিচিত৷ বিশেষ আয়নার অপর প্রান্তে বসে অথবা লাইভ ভিডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে তাঁরা স্ট্রেস-জনিত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছিলেন৷এই পরীক্ষার সময় দেখা যায় যে, প্রায় ২৬ শতাংশ পর্যবেক্ষকের শরীরে যথেষ্ট মাত্রায় ‘কর্টিসল’ নিসৃত হয়েছে৷ পরিচিত মানুষকে স্ট্রেস-এর মধ্যে দেখলে সেই মাত্রা বেড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ হয়ে যায়, অপরিচিতদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১০ শতাংশ৷ সরাসরি দেখলে ৩০ শতাংশ এবং ভার্চুয়াল পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ২৪ শতাংশ মানুষ পরোক্ষ স্ট্রেস-এ ভোগেন৷ অর্থাৎ টেলিভিশনে কোনো সিরিয়াল বা অনুষ্ঠান দেখেও মনে এমন স্ট্রেস হতে পারে৷ এ প্রতিবেদনটি ডি ডাব্লিউ এর, অতএব স্ট্রেস দূরে রাখতে হলে অন্যদের স্ট্রেস থেকেও নিজেকে দূরে রাখতে হবে৷