স্টাফ রিপোর্টার, জি নিউজঃ মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার জয়মণ্ডপ গ্রামে থাকতেন রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা। তার বাবার নাম আবদুল খালেক। ওই এলাকার লোকজন রানার বাবাকে কলু খালেক হিসেবে চিনতেন। তিনি একসময় ফেরি করে তেল বিক্রি করতেন। প্রায় ৩০ বছর আগে তিনি সাভারে এসে ভাড়া বাসায় থেকে তেলের ব্যবসা করেন। একসময় তেলের ঘানি দেন। সেখান থেকে শুরু করেন খৈলের ব্যবসা। একপর্যায়ে সাভার নামাবাজারে তেলের মিল গড়ে তোলেন। এভাবেই সোহেল রানার পরিবারে অর্থনৈতিক উত্থান শুরু।
১৯৯৪ সালে সাভার কলেজের ভিপি ছাত্রদলের নেতা হেলালউদ্দিনের ডানহাত বলে পরিচিত গাড়িচালক জাকিরের সাথে পরিচয় হয় সোহেল রানার। গাড়িচালক জাকিরের সাথে সোহেল রানার বোন সুফিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। এভাবেই ছাত্রদলের নেতা হেলালউদ্দিনের পরিবারের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার পরিবারের। হেলালউদ্দিনের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে সোহেল রানা গড়ে তোলেন সন্ত্রাসীবাহিনী। এলাকায় তার বাহিনী পরিচিতি পায় রানা বাহিনী নামে। সন্ত্রাসীবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সোহেল রানা গড়ে তোলেন বিভিন্ন ব্যবসা। ২০০৭ সালে তিনি নির্মাণ করেন রানা প্লাজা।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান জানান, অর্থ বৈভব ও প্রতিপত্তির কারণে সোহেল রানার সাথে স্থানীয় এমপি তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের সাহচর্য হয়। তার সু-নজরে পড়ে সোহেল রানা হয়ে ওঠে অপ্রতিরোধ্য। একপর্যায়ে তাকে দেয়া হয় পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ। স্থানীয়রা জানান, হরতালবিরোধী মিছিল, এমপিদের জনসভা, সরকারি সম্পদের ইজারা-এসব কাজে সোহেল রানার একচ্ছত্র আধিপত্য গড়ে ওঠে। জমি ব্যবসার নামে নিরীহ লোকজনের জমি দখলের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। গত বুধবার ভবনধসের আগেও হরতালবিরোধী মিছিল করার জন্য লোক জড়ো করেছিলেন রানা।
সাভার পৌরসভা সূত্র জানিয়েছে, রানা প্লাজার নির্মাণ শুরু হয় ২০০৭ সালে। এর আগে জায়গাটি ছিলো পরিত্যক্ত। পেছনের দিকে ছিলো জলাশয়। ভবন নির্মাণ করার আগে বালু ফেলে ভরাট করা হয়। এর উদ্বোধন হয় ২০১০ সালে। ভবনের পেছনের অংশ রানা দখল করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সাভার পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, রানা প্লাজার পেছনের অংশ সরকারি খাল হিসেবেই দেখেছেন তিনি। নাম ছিলো সাধাপুর খাল। এটি দখল করে ভবন নির্মাণ করেন রানা। এছাড়া সাভার বাজার রোডে রানার রয়েছে আটতলা ভবন রানা টাউয়ার। এটির একটি পিলারে ফাটল দেখা দেয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভবনটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। আটতলার ওপরে এখনো নির্মাণকাজ চলছে। তবে ইতোমধ্যে পার্কিং থেকে ৩ তলা পর্যন্ত ভাড়া দেয়া হয়েছে। রানা টাউয়ারের পাশেই তাদের ছয়তলা বাসভবন রয়েছে। ধামরাইয়ের কালামপুরে রানার পরিবারের একটি ইটভাটা আছে।
রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার কিভাবে উত্থান শুরু
Share This