খালেদ হোসেন টাপু,রামুঃ রামুবাসীর দুঃখে পরিণত হয়েছে ফকিরাবাজার-জাদিপাড়া সড়কের ভুতপাড়ার ভাঙ্গন। শুধূ বন্যা নয়,এ ভাঙ্গনের কারণে বাঁকখালী নদীতে পানি একটু বাড়লেই এখন প্লাবিত হচ্ছে ফতেখাঁরকুলের বৃহত্তর মেরংলোয়াসহ উপজেলার অন্তত বিশটি গ্রাম। তাই দুর্গত মানুষ এখন ত্রাণ নয়,লাগাতার এ মহাদুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ চায়। তাদের দাবি, জরুরী ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ভুতপাড়া ও জাদীপাড়ার ভাঙ্গন সংস্কার করা হোক।
গতকাল শুক্রবার বিকালে রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য মধ্যম মেরংলোয়া গ্রামে গেলে এলাকাবাসী এসব দাবি তুলে ধরেন। এসময় এলাকাবাসী দায়িত্বশীল দুই কর্মকর্তা পেয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি,এ দুই এ গ্রামে অভুক্ত মানুষের জন্য লঙ্গরখানা খোলা এবং জরুরী ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বিধ্বস্থ বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হোক। এসময় এ দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে আন্দোলনের হুমকীও দেন বানবাসী দুর্গত মানুষ।
এলাকাবাসী জানায়, প্রতিবছর বর্ষা এলেই ফকিরা বাজার জাদিপাড়া সড়কটির কয়েকটিস্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্ঠি হয়। সর্বশেষ ২০১২ সালের বন্যায় নতুন করে বিধ্বস্থ হয় সড়কের ভুতপাড়া অংশটি। এরপর এ ভাঙ্গন সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি থেকে দফায় দফায় মোটা অংকের বরাদ্দ দেওয়া হলেও এ বছর একইস্থানে বিশাল অংশ আবার বিধ্বস্থ হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ,প্রতি বছর এ ভাঙ্গন সংস্কারে মোটা অংকের বরাদ্দ দেওয়া হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা অনিয়মের বর্ষা সরকারী বরাদ্দ পানিতে ভেসে যায়। পরে মানুষের অবর্ণণীয় দুঃখকে পুজি করে ভাঙ্গন ঠেকানোর নামে শুরু হয় লুটপাটের বাণিজ্য।
সুশাসনের জন্য জন্য নাগরিক সুজন রামুর সভাপতি ও মেরংলোয়া গ্রামের বাসিন্দা মাষ্টার মো. আলম জানান,ভুতপাড়ার ভাঙ্গন এখন রামুবাসীর দুঃখে পরিণত হয়েছে। বন্যার পানি বা পাহাড়ী ঢল নয়,একটু ভারী বৃষ্ঠি হলেই এখন বি¯ীÍৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এলাকার শতশত বসতঘরে চুলো জ্বলছেনা। মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। তিনি জানান,এ অবস্থায় এলাকাবাসীর জোরদাবি,বর্ষার পরেই সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক।
ভুতপাড়ার বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, কারো বাড়ি-ঘরে চুলো জ্বলছেনা। তাই খাবারের জন্য হাহাকার তো আছেই। তবুও বলবো,আমরা ত্রাণ চাইনা,খাবার চাইনা,জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ চাই। এবং সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নয়,সেনাবাহিনীর তত্তাবধানে সিসি ব্লকসহ বিধ্বস্থ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হউক।
রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানান,জরুরী ভিত্তিতে এ ভাঙনে প্রাথমিক প্রতিরোধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়টি প্রকৃয়াধীন রয়েছে। এমপি মহোদয় দেশের বাইরে আছেন,তিনি দেশে আসলেই এ বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।