অনলাইন ডেস্কঃ- পৃথিবীর বাইরে যে ক’টি জায়গায় এ পর্যন্ত জলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে যুক্ত হলো নতুন এক নাম – এনসেলাডাস৷ সূর্য থেকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনিকে প্রদক্ষিণ করছে এই উপগ্রহ৷ নাসার এই ছবিতে শনি গ্রহের চাঁদ এনসেলাডাসের ভেতরের সম্ভাব্য ছবিটা দেখা যাচ্ছেসূর্য থেকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনিকে প্রদক্ষিণ করছে ৫০০ কিলোমিটার চওড়া এই উপগ্রহ৷ তারই দক্ষিণ মেরুতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বরফের নিচে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীর এক সাগরে বইছে তরল জল৷ গত আট বছর ধরে শনিকে ঘিরে অনুসন্ধান চালিয়ে আসা নাসার মহাকাশযান ক্যাসিনির পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ আর যেহেতু পানি থাকলে প্রাণ বিকাশের সম্ভাবনা জোরালো হয়, সেহেতু এনসেলাডাসের এই সাগর রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে গবেষকদের মধ্যে৷ এর আগে ক্যাসিনির পাঠানো ছবি থেকে জানা গিয়েছিল, এনসেলাডাসের দক্ষিণ মেরু থেকে বাষ্পের আকারে জলকণা ছড়িয়ে পড়ছে উপগ্রহটির আকাশে৷এটিও নাসার পাঠানো ছবি আর সেই বাষ্পে রয়েছে লবণ ও বিভিন্ন জৈব যৌগ, যা প্রাণের প্রাথমিক বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষক ডেভিড স্টিভেনসন জানান, খুব সম্ভবত শনি এবং এর উপগ্রহগুলোর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানাপড়েনে সৃষ্ট উত্তাপ থেকেই এনসেলাডাসের এই সাগরের জন্ম৷ ক্যাসিনির পাঠানো তথ্যে কম্পিউটার সিমুলেশন তৈরির পর এমনটাই ধারণা হয়েছে বিজ্ঞানীদের৷আর বরফে ঢেকে থাকা এই সাগরের তলদেশ ছুঁয়েছে এনসেলাডাসের মূল পাথুরে স্তর৷ যা প্রাণের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির সম্ভাবনা আরো জোরালো করেছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জনাথন লুনিনি৷জ্যোতির্বিদ্ উইলিয়াম হারশেল ১৭৮৯ সালে শনির এই উপগ্রহটি আবিষ্কার করেন৷ শনিরই সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটান এবং বৃহস্পতির ইউরোপা ও গ্যানিমেড-এ আগেই পানির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ অবশ্য এর মধ্যে কেবল এনসেলাডাসের সাগরই শিলাস্তরের সংস্পর্শে রয়েছে৷বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে লুনিনি বলেন, ‘‘এনসেলাডাস আর ইউরোপা – কোথায় প্রাণের বিকাশের সম্ভাবনা বেশি – তা বলা সম্ভব নয়৷ দুটোতেই থাকতে পারে, আবার কোনোটিতে নাও থাকতে পারে৷ আমার মনে হয়, ক্যাসিনির মিশন শেষ হয়ে গেলে আমাদের দুই জায়গাতেই নতুন ধরনের মহাকাশযান পাঠাতে হবে, এনসেলাডাসের সাগর আবিষ্কার আমাদের সে কথাই বলছে৷” এপ্রতিবেদনটি ডি ডাব্লিউ।