জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ- বিএনপি বলে অভিযোগ করে বলেছেন সরকার যৌথ বাহিনী নামিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের খুন করছে । এদেশের মানুষ পিঠাভাগের এই নির্বাচন মানবে না।এদিকে দলটির দাবি, বিরোধী নেতাদের হত্যা-গুমের এ দায় নির্বাচন কমিশনের। ১৮ দলের ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ দাবি করেন। তিনিবলেন, ক্ষমতাসীন দল যে নির্বাচনে সরকারি ও সম্ভাব্য বিরোধী দলের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে দেয় ওই নির্বাচন অবশ্যই পাতানো। তামাশার এই নির্বাচনে বানরের পিঠাভাগের মতো সংসদীয় আসনগুলোকে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে। এতে ৯ কোটি ভোটারের মধ্যে ৫২ শতাংশ মানুষকে এরই মধ্যে ভোটদানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ভোট চাওয়ার মতো নৈতিক মনোবল নেই। তাই বাকি ১৪৬টি আসনেও তারা আজ্ঞাবহ ইসির সহায়তায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের নির্লজ্জ কৌশল নিয়ে জনমতের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। এমন নির্বাচন জনগণের প্রত্যাশিত ও গ্রহণযোগ্য নয়। জনগণ এই নির্বাচন মানে না। নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে বিরোধী দলের আন্দোলন দমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে শাসকদলীয় ক্যাডাররা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করেছে। যৌথ বাহিনী নামিয়ে সরকার হিট লিস্ট তৈরি করে বিরোধী নেতাকর্মীদের খুন করছে। কয়েক দিনে লক্ষ্মীপুর, জয়পুরহাট, সাতক্ষীরা, নীলফামারী, নোয়াখালী, লালমনিরহাট ও যশোরে আমাদের ২৫ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। যশোরে বিএনপি নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তফসিল ঘোষণার পরও যৌথ বাহিনী দিয়ে জেলায় জেলায় ১৮ দলের নেতাদের হত্যা-গুম করার দায় থেকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) রেহাই পাবে না। এসব ঘটনার জন্য আজ্ঞাবাহী ইসিকে ভবিষ্যতে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। বিএনপির নীতিনির্ধারক এই নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার মোড়কে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলনের চিরস্থায়ী পথ সুগম করতে সরকার দেশে গৃহযুদ্ধের বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটা ভয়াবহ অশনি সঙ্কেত। ক্ষমতার স্বীকৃতি দেশে-বিদেশে কোনো মহলেই মিলবে না। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে ও যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসে বাংলাদেশ নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কংগ্রেসে দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশকে নিয়ে শুনানির কথা শুনছি। এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। এই সরকারের চরম একগুঁয়েমি, ক্ষমতার লোভ ও অগণতান্ত্রিক রাজনীতিই এদেশের নাগরিকদের এই অসম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে গিয়ে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। একই সঙ্গে চলমান আন্দোলনের খবর ও তথ্যচিত্র প্রকাশ ও প্রচারের জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানান নজরুল ইসলাম খান।তাঃ- ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৩